প্রত্যয় ডেস্ক, গাজী মো. তাহেরুল আলম, ভোলা বিশেষ প্রতিনিধিঃ ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর টানা ২২ দিন নদীতে ইলিশ মাছ ধরার সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আগামীকাল। দুঃসময় ও দুর্দিনের এ সময়টুকু ভুলতে বসেছে জেলেদের পরিবার ।নদীতে নামার সকল প্রস্তুতি নিয়ে অধীর অপেক্ষামাণ জেলেরা। এমন দৃশ্যই পরিলক্ষিত হচ্ছে ভোলা জেলার মেঘনা নদীর তীরে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মাছ শিকারে যাওয়ার আগেই নৌকা ও জাল প্রস্তুত করছেন জেলেরা।
কেউ নৌকা মেরামত করছেন, কেউ নৌকা ও ট্রলারে রং দিচ্ছেন কেউবা ব্যস্ত জাল তৈরি আর ট্রলারের ইঞ্জিন মেরামত করে সময় পার করছেন। কেউ বা আবার নতুন করে নৌকা তৈরি করছেন।
সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে এমন প্রস্তুতি জেলেদের। দিন যত ঘনিয়ে আসছে ঠিক ততই যেন ব্যস্ততা বাড়ছে তাদের। ভোলা সদরের ইলিশা, তজুমুদ্দিন ফেরিঘাট এলাকায় মেঘনা পাড়ের জেলেদের এমন ব্যস্ততা চোখে পড়ে।
নদীর কুল ঘেঁষে বাঁধের ওপর রাখা হয়েছে সারি সারি নৌকা ও ইঞ্জিন চালিত ট্রলার। সেখানেই ওই নৌকা বা ট্রলার মেরামতের কাজ করছেন জেলেরা। বেকার জেলেদের সময় কাটছে নৌকা বা ট্রলার প্রস্তুতি নিয়ে।
শুধু ইলিশাঘাট, তজুমদ্দিন নয়, নৌকা প্রস্তুতের এমন চিত্র তুলাতলী, ভোলর খাল, ইলিশা বিশ্বরোডসহ জেলার বেশিরভাগ এলাকায় দেখা যায়।
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। ৪ নভেম্বর থেকে ফের মাছ ধরা শুরু হবে নদীতে। সেই দিনটিকে সামনে রেখে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। মেঘনা পাড়ে ব্যস্ততার মধ্যে দিন পার করছেন তারা।
জেলে আবদুল কাদির জানান, এ ক’দিন ধার দেনা করে দিন পার করেছেন। সামনে আসছে মাছ ধরার সময়, তাই নৌকা মেরামত করছেন। আগে থেকে নৌকা তৈরি করতে না পারলে তখন সময় পাওয়া যাবে না। মাছ শিকারে যাওয়ার জন্য এসময় নৌকা মেরামত ও রং দেওয়ার কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন জেলেরা।
তারা বলেন, এ বছর ভরা মৌসুমে তেমন মাছ ধরা পড়েনি। আশাকরি, ইলিশ নিষেধাজ্ঞার পর ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে। তখন মাছ ধরেই ঋণ পরিশোধ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।
ভোলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, জেলেদের দিন কষ্টে কাটছে, তবুও তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকারে যায়নি। এখন জেলেদের কষ্টের দিন শেষ হতে যাচ্ছে, তারা এখন মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জাল, নৌকা, ইঞ্জিন মেরামত করার কাজে ব্যস্ত তারা। ইলিশ শিকার করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন সে ব্যাপারেও আশাবাদী তারা।
ভোলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, এবার ইলিশ রক্ষা অভিযান শতভাগ সফল হয়েছে। এতে আমাদের ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। এ বছর ইলিশ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছিলো ১ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন।
তিনি বলেন, ২২ দিনের ইলিশ নিষেধাজ্ঞার সময় জেলে পুনর্বাসনের জন্য বরাদ্দকৃত চাল বিতরণ শেষ হয়েছে। ৪ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে জেলেরা মাছ শিকারে যেতে পারবে।