আদৌও কি এই পৃথিবীকে আমরা রক্ষা করতে পারব?
হ্যাঁ,এটা ঠিক যে এই বিশাল মহাবিশ্বে পৃথিবীই আমাদের একমাত্র বাসস্থান। মানুষ পৃথিবীতে রাজত্ব করার হাজার বছর আগেও বন্য প্রাণী যেমন- ডাইনোসর পৃথিবীতে বিচরণ করত। এত বড় বড় প্রাণীরাও নিজেদের অস্তিত্ব আজীবন টিকিয়ে রাখতে পারেনি! সময়ের গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। আমরা মানুষ জাতিও একদিন বিলীন হয়ে যাব সেই সময়ের গর্ভেই। হয়তবা পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আগে, নতুবা পৃথিবীর সাথেই!
মানুষ জাতি অন্য গ্রহ যেমন- মঙ্গলে বসবাসের প্রক্রিয়া সাজাচ্ছে। হতে পারে একদিন সফল হবে, আবার এমনও হতে পারে কখনো সফল হলো না! কিন্তু এ চেষ্টা চলতেই থাকবে, কারণ মানুষ জানে পৃথিবী একদিন বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে! যতদিন না অন্য গ্রহ বসবাসের যোগ্য করা যাচ্ছে ততদিন এই পৃথিবীই মানুষের একমাত্র ঠিকানা। তাই যতটুক সম্ভব মানুষকেই চেষ্টা করতে হবে এই নীল গ্রহটাকে রক্ষা করার। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আদৌও কি এই পৃথিবীকে আমরা রক্ষা করতে পারব! আমাদের হাতে কি সেই শক্তি আছে!
আমরা জানি, মহাবিশ্বে হাজার হাজার গ্রহানু, ছোট-বড় লাখো পাথর ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটাও জানি যে এমনকি পৃথিবীর খুব কাছেও কয়েকটা গ্রহানু বা পাথর ইতিমধ্যে এসেছে এবং ঘেষে চলে গেছে। প্রতিবার যে পৃথিবীর ভাগ্য ভালো হবে এমনটা তো আশা করা যায় না। হতে পারে কোনো এক অজানা গ্রহানু বা বিশাল এক পাথর পৃথিবীতে সজোরে আঘাত হানলো! পৃথিবী নিমিষেই ধ্বংস হয়ে গেল।এই ধরনের ঘটনা মানুষের হাত নেই এবং মানুষ চাইলেও এই ঘটনাকে আটকে রাখতে বা বাঁধা দিতে পারবে না! এটা মানুষের সীমাবদ্ধত!
গ্রহানুর মত আরো নানা কারণ আছে যার প্রভাবে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বা মানুষ জাতি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। যেমন- জনসংখ্যা বিস্ফোর, পারমানবিক যুদ্ধ, রোবট, জৈব অস্ত্র। এই কারণগুলো সম্পূর্ণ মানুষের নিয়ন্ত্রণে। বর্তমান পৃথিবীতে যে পরিমাণ পারমানবিক অস্ত্র রয়েছে তা দিয়ে নিমিষেই পৃথিবীকে দশ বার ধ্বংস করা যাবে! বর্তমান পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় সাত বিলিয়ন বা সাতশত কোটি! এখনই এই বিশাল জনসংখ্যার কারণে যে হারে সমস্যা যেমন- দুর্বিক্ষ, বেকারত্ব, জায়গার অভাব দেখা দিচ্ছে তাতে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় এই সংখ্যাটা যদি আরো কয়েকগুন বেড়ে যায় তাহলে পৃথিবীতে এক ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে!
এছাড়াও যে সব উল্লেখযোগ্য কারনে পৃথিবী বা মানব জাতি ধ্বংস হতে পারে তাদের মত অন্যতম হচ্ছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং, প্যানডামিক রোগ, ফাঙ্গাস, স্নোবল ইফেক্ট ইত্যাদি। গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই। সবাই এটা সম্পর্কে অবগত আছে। যেটার সম্পর্কে সব মানুষ অবগত নয় তা হচ্ছে এই গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর প্রায় ৭০% প্রাকৃতিক ঘটনা। মানুষের নিয়ন্ত্রণে আছে শুধু মাত্র ৮-৯% ঘটনা। আমরা খুব চেষ্টা করলেও গ্লোবাল ওয়ার্মিং কে রুখতে পারব না। আমরা যা করতে পারি তা হলো এটা হওয়ার বা ঘটার সময়টা বাড়াতে পারি! তাও যে আবার খুব একটা বেশি হবে এমনটা নয়, হতে পারে খুব করে হলে ৬০-৭০ বছর! এছাড়া বর্তমানে করোনা নামের এক প্যনডেমিক রোগ পৃথিবীতে ছেয়ে আছে। আজকের তারিখ পর্যন্ত প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছে। না জানি এই সংখ্যা সামনে আরো কত বাড়ে! এটার প্রতিসেধক বের না হওয়া পর্যন্ত এটা তার ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাবে।
আমারা মানুষেরা যতদিন পারি পৃথিবীকে রক্ষা করে যাওয়ার চেষ্টা চালাতে হবে। জানি বিশ্ব রাজনীতি ভিন্ন কথা বলে! সবাইকে সচেতনা করা যাবে এমনটা ভাবা বোকামি। যতদিন না নিজের উপর পড়ছে ততদিন মানুষ সতেচনা হবে না, এটা মানুষের স্বভাব! তবুও এতকিছুর পড়েও যারা সচেতন তাদেরকে আমার কুর্নিশ। শেষে একটি ছোট্ট দু-লাইনের ছড়া দিয়ে শেষ করছি। “সুস্থ হোক পৃথিবী, সুন্দর হোক জীবন।”
লেখক: তন্ময় দত্ত মিশু,
২য় বর্ষ, ইংরেজি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়