নিজস্ব প্রতিবেদক: কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় দেশের বন্যা ও অন্যান্য দুর্যোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ছাড়াও দুস্থ, অতিদরিদ্র ব্যক্তি ও পরিবারকে বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল দেবে সরকার। এ জন্য ১ কোটি ৬ হাজার ৮৬৯টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে এক লাখ ৬৮ টন চাল বরাদ্দ দিয়ে মঙ্গলবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
সেখানে বলা হয়েছে, ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ৬৪ জেলার ৪৯২টি উপজেলা এবং ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ ক্যাটাগরির ৩২৮টি পৌরসভার অতিদরিদ্র ও অসহায় দুস্থ পরিবার প্রতি ১০ কেজি করে চাল দিতে ৮৭ লাখ ৭৯ হাজার ২০৩টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে ৮৭ হাজার ৭৯২ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পৌরসভার জন্য ১২ লাখ ২৭ হাজার ৬৬৬টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে ১২ হাজার ২৭৬ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ খাদ্যশস্য আগামী ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে ডিসিদের উত্তোলন করতে হবে। বরাদ্দপত্রে বলা হয়েছে, জেলা প্রশাসকরা ভিজিএফ বরাদ্দের বিষয়ে নিজ নিজ এলাকায় সংসদ সদস্যদের অবহিত করবেন। ভিজিএফ উপকারভোগী বাছাইয়ে ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডভিত্তিক বরাদ্দকৃত ভিজিএফ কার্ড সংখ্যা পুনঃবিভাজন করে তালিকা তৈরি করতে হবে।
দুস্থ বা অতিদরিদ্র ব্যক্তি বা পরিবারকে এই খাদ্য সহায়তা দিতে হবে জানিয়ে বরাদ্দপত্রে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বন্যাক্রান্ত ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দুস্থ ও অতিদরিদ্ররা অগ্রাধিকার পাবেন। সরকারের বেঁধে দেওয়া ১২ শর্তের মধ্যে চারটি পূরণ করে এমন ব্যক্তি বা পরিবারকে দুস্থ হিসেবে গণ্য করে সহায়তা দিতে হবে।
শর্তগুলো হচ্ছে যে পরিবারের মালিকানায় কোনো জমি নেই বা ভিটাবাড়ি ছাড়া কোনো জমি নেই, যে সব পরিবার দিনমজুরের আয়ের ওপর নির্ভরশীল, মহিলা শ্রমিকের আয় বা ভিক্ষাবৃত্তির ওপর নির্ভরশীল, যে পরিবারে উপার্জনক্ষম পূর্ণ বয়স্ক কোনো পুরুষ সদস্য নেই বা উপার্জনশীল কোনো ব্যক্তি নেই, পরিবারে স্কুলগামী শিশুকে উপার্জনের জন্য কাজ করতে হয়, যে পরিবারের প্রধান স্বামী পরিত্যক্তা, বিচ্ছিন্ন বা তালাকপ্রাপ্তা মহিলা রয়েছে, যে পরিবারের প্রধান অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা বা পরিবারের প্রধান অস্বচ্ছল ও অক্ষম প্রতিবন্ধী, যে পরিবার কোনো ক্ষুদ্রঋণ প্রাপ্ত হয়নি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে চরম খাদ্য বা অর্থ সঙ্কটে পড়েছে এবং যে পরিবারের সদস্যরা বছরের অধিকাংশ সময় দুই বেলা খাবার পায় না।
সরকার বলছে, ইউনিয়ন বা পৌরসভা ভিজিএফ কমিটি কর্তৃক প্রকাশ্য সভায় বর্ণিত তালিকা প্রণীত ও প্রত্যায়িত হতে হবে। জেলা বা উপজেলা খাদ্যগুদাম থেকে বিতরণ কেন্দ্র পর্যন্ত চাল পৌঁছানোর পরিবহন ও আনুষাঙ্গিক খরচ সরকারি খাত থেকে বহন করতে হবে। ভিজিএফ উপকারভোগীর তালিকা এমনভাবে করতে হবে যাতে কোনো অবস্থাতেই একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি ভিজিএফ বরাদ্দ না পায়।