আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দেশজুড়ে পুরোপুরি লকডাউন জারি করছে মালয়েশিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দীন ইয়াসিন এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, আগামী জুন থেকে এই লকডাউন কার্যকর হবে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে রেকর্ড সংখ্যক সংক্রমণের কারণে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দীন ইয়াসিন জানিয়েছেন, আগামী ১ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত দেশের সব সামাজিক এবং বাণিজ্যিক এলাকায় কঠোর লকডাউন জারি থাকবে। শুধুমাত্র জরুরি সেবা এবং অর্থনৈতিক সেক্টরের কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানানো হয়েছে। আর এই তালিকা তৈরি করবে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল।
কর্মকর্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংক্রমণ দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। কিছুদিন আগেই শেষ হলো মুসলিমদের পবিত্র পবিত্র রমজান মাস এবং ঈদুল ফিতর। এই উৎসব উপলক্ষে ছুটির দিনগুলোতে লোকজন একে অপরের সঙ্গে দেখা করেছেন, সমবেত হয়েছেন। এ থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দীন বলেন, সাম্প্রতি সময়ে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। হাসপাতালে রোগীর চাপও বাড়ছে। সংক্রমণ বাড়তে থাকলে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা ব্যহত হবে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, মালয়েশিয়ায় এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫১৪। এর মধ্যে মারা গেছে ২ হাজার ৫৫২ জন। তবে ইতোমধ্যেই সেখানে সুস্থ হয়ে উঠেছে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ১৩৯ জন। দেশটিতে বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৭২ হাজার ৮২৩।
শুক্রবার দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৮ হাজার ২৯০ জন। একই সময়ের মধ্যে ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। টানা চারদিন ধরেই দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণের রেকর্ড হচ্ছে। দেশটিতে ইন্টেন্সিভ কেয়ার এবং ভেন্টিলেটর সেবা দেয়া রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
মালয়েশিয়া ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, ভ্যাকসিন কার্যক্রম ধীর গতিতে চলছে। এখন পর্যন্ত মাত্র ১৭ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দীন জানিয়েছেন, অর্থনীতি সম্পূর্ণ লকডাউন রাখার সময় অর্থনীতিমন্ত্রী বিভিন্ন ব্যক্তি এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রণোদনা ঘোষণা করবেন।
তিনি জানিয়েছেন, প্রথম দুই সপ্তাহের লকডাউনে যদি সংক্রমণ কমতে দেখা যায় তাহলে সরকার আস্তে আস্তে বিভিন্ন সেক্টর চালুর অনুমতি দেবে। করোনা মহামারির কারণে এমনিতেই অর্থনীতিতে ধস নেমে এসেছে কিন্তু সংক্রমণ রোধে এ ছাড়া বিকল্প নেই বলে জানানো হয়েছে।