দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ জাপানে করোনাভাইরাস আঘাত হানার আগে রাজধানী টোকিওর স্টেশনগুলোর বিলবোর্ড ও ট্রেনগুলো ভরা থাকতো নজরকাড়া বিজ্ঞাপনে। কিন্তু করোনাকালে ওই বিলবোর্ড আর ট্রেনগুলো এখন ফাঁকা পড়ে আছে।
করোনা সংক্রমণ এড়াতে শহরের লোকজন প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হয় না বললেই চলে। তো জনশূন্য শহরে বিজ্ঞাপনের প্রয়োজন দেখছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে টোকিওতে প্রচার কার্যক্রম স্থগিত করছেন বিজ্ঞাপনদাতারা। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জাপানের বিজ্ঞাপন শিল্পও। এ তথ্য জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জাপান টাইমস।
বিজ্ঞাপন শিল্পের সঙ্গে সংশিষ্ট একজনকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘করোনা গোটা বিজ্ঞাপনের শিল্পের জন্য একটি বিশাল ধাক্কা।’
টোকিওর ব্যস্ততম অঞ্চল শিবুয়ায় এই পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান। ইস্ট জাপান রেলওয়ে কোম্পানির শিবুয়া স্টেশনের গেইটে থাকা হাচিকো বোর্ডের বিলবোর্ডটি বৃহস্পতিবার সম্পূর্ণ খালি ছিল। স্টেশন বাজারের দেয়ালে সাঁটানো পোস্টারগুলির পাশাপাশি শিবুয়া ১০৯ ডিপার্টমেন্ট স্টোরের কাছে সাইনবোর্ডগুলোও নামিয়ে ফেলা হয়েছে।
জাপানে চার মিটার দীর্ঘ ও ২০ মিটার প্রস্থের হাচিকো বোর্ড বিজ্ঞাপনের জন্য খুবই জনপ্রিয় স্পট। সেখানকার টেলি ক্যামেরায় বিভিন্ন সময়ে হাচিকো বোর্ড ধরা পড়ে। ওই বোর্ডে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে প্রতি সপ্তাহের ৮০ লাখ ইয়েন ভাড়া গুণতে হয়।
বিপুল চাহিদার কারণে সহজে সেটি খালি পাওয়া যায় না। কিন্তু কোভিড-১৯’য়ের পর পুরো পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। গত ২০ এপ্রিল থেকে চার সপ্তাহ ধরে সেখানে কেউ কোনও বিজ্ঞাপন দেয়নি।
এ সম্পর্কে স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেন, একনাগাড়ে এতদিন বিলবোর্ডটিকে কোনদিন খালি দেখেছি, এমনটি মনে পড়ে না।
শিনজুকু স্টেশন থেকে টোকিওর ব্যস্ততম এলাকাগুলো দিয়ে পশ্চিমের পথের ট্রেনগুলো থেকেও বিজ্ঞাপন সরিয়ে নিয়েছে কোম্পানিগুলো।
প্রাদুর্ভাবের আগে যেখানে ট্রেনগুলির ছাদ থেকে নানা বিজ্ঞাপন ঝুলতো, সেখানে এখন শুধু ট্রেন কোম্পানির নিজস্ব বিজ্ঞপ্তি। পাশাপাশি করোনা সংক্রমণের সতর্কতা সম্বলিত পোস্টারও শোভা পাচ্ছে।
এ সম্পর্কে জাপান অ্যাসোসিয়েশন ফর রেল অ্যাডভারটাইজিংয়ের এক কর্মকর্তা অভিমত, ‘বিজ্ঞাপনের দাম পড়ে গেছে। দেশে জরুরি পরিস্থিতি তুলে নেয়ার পরও বিজ্ঞাপনগুলি দ্রুত ফিরবে বলে মনে হচ্ছে না।’
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন