বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: মাত্র চার ঘণ্টার ব্যবধানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাবা ইয়াকুব আলী (৭০) ও ছেলে আজগর আলীর (৫৫) মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) রাতে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে বাবা ইয়াকুব আলী রাত সাড়ে ৮ টায় মারা যান। ওদিকে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজগর আলী রাত সাড়ে ১২ টায় মারা যান।
আজগর আলীর খালাতো ভাই ও হরিপুর উপজেলার চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান মুকুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজগর আলী হরিপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও স্থানীয় শীতলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন ।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বাবা-ছেলে । কিছুটা সুস্থ বোধ করায় বৃহস্পতিবার(১ জুলাই) সন্ধায় বাড়ি ফেরেন বাবা ইয়াকুব আলী (৭০)। কিন্তু বাড়ি ফিরেই রাত সাড়ে ৮ টায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ইয়াকুব আলী। অপরদিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় একই সময়ে ছেলে আজগর আলীকে (৫৫) নেওয়া হয় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। পিতার মৃত্যুর চার ঘণ্টা পরই রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছেলে আজগর আলীও মারা যান ।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত ২৫ জুন (শুক্রবার) ইয়াকুব আলী জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন। এ সময় তাকে করোনা টেস্টের পরামর্শ দেয়া হয়। পরে স্বজনরা তাকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই তার করোনা পজিটিভ আসে। পাঁচদিন পর ইয়াকুব আলীর ছেলে আজগর আলীর নমুনা হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। এ সময় তার করোনার পজিটিভ হলে সেই দিন রাতেই তাকে একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পিতাপুত্র সহ একদিনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে আরো ২জনের। একজন মারা গেছেন সদর উপজেলার আখানগর ইউনিয়নের ভেলারহাট গ্রামে। তিনি ভেলারহাট বাজারের একজন দোকানদার।অপরদিকে শহরের কালিবাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজাদ করোনায় আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায় মারা গেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রবিউল আজম।
অবশ্য সিভিল সার্জন ড.মাহফুজার রহমান সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। তিনি বলেন, মৃতদের নাম ঠিকানা উপজেলা অফিস হতে না পাওয়ায় আমরা এখনো তার হিসাব দিতে পারি না।
এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২৫ জন। মোট নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২৭৬ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার ৫০৯জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৪৫জন ও মৃত্যু ৮৩ জনের।