প্রত্যয় ডেস্ক: কারাবাখ যুদ্ধে আর্মেনিয়ার কাছ থেকে উদ্ধারকৃত এলাকা সফরে গেছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম আলিয়েভ। সোমবার সস্ত্রীক এলাকাটি পরিদর্শনে যান তিনি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি। আজেরি প্রেসিডেন্টের সহকারী হিকমেত হাজিয়েভ জানিয়েছেন, আর্মেনিয়ার দখলমুক্ত হওয়া জাবরাইল এলাকা সফরে গেছেন প্রেসিডেন্ট। হিকমেত হাজিয়েভ বলেন, ওই এলাকায় সবকিছু মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর্মেনিয়া সেখানে যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা কল্পনারও বাইরে। আজেরি প্রেসিডেন্ট এখন সেখানে সর্বাত্মক পুনর্গঠন কাজের ওপর জোর দিচ্ছেন।
জাবরাইল ছাড়াও মুক্ত আরও কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেন আজেরি প্রেসিডেন্ট। নিজে গাড়ি চালিয়ে তিনি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। এর কিছু ভিডিও নিজেই ইনস্টাগ্রামে পোস্টে করেছেন তিনি। আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, মূলত কারাবাখের ইরান সীমান্তবর্তী এলাকা ও আরাস নদীর উপকূলবর্তী এলাকা ঘুরে দেখেন আজেরি প্রেসিডেন্ট। তুর্কি সামরিক সহায়তা নিয়ে কারাবাখ যুদ্ধে দৃশ্যত বিজয়ী হওয়ার পর এমনিতেই উচ্ছ্বসিত আজেরিরা। যুদ্ধ জয়ের পর তুরস্ক ও নিজ দেশের পতাকা হাতে নিয়ে রাজপথে নেমে আসেন আজারবাইজানের সাধারণ মানুষ। এরমধ্যেই সোমবার উদ্ধারকৃত অঞ্চলটি সফরে যান আজেরি প্রেসিডেন্ট।
এদিকে আজারবাইজানের কাছে শোচনীয় পরাজয়ের পর নিজ দেশে চাপের মুখে রয়েছেন নিকোল পাশিনিয়ান। তার পদত্যাগের দাবিতে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ, এমনকি তাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনাও ঘটেছে। সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেছেন আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী। আর্মেনিয়ার সরকারি হিসাবে কারাবাখ যুদ্ধে দেশটির দুই হাজার ৩৭১ জন আর্মেনীয় সেনা নিহত হয়েছে। যুদ্ধ বন্ধে গত মঙ্গলবার একটি চুক্তিতে উপনীত হয় রাশিয়া, আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। আজেরি বাহিনী আর্মেনিয়ার কাছ থেকে কারাবাখের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর শুশা দখলের পর এ চুক্তিতে উপনীত হয় তিন দেশ। শুশা কারাবাখের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে যুদ্ধ হলেও চুক্তিতে রাশিয়া যুক্ত হয়েছে মূলত মধ্যস্থতাকারী হিসেবে।
ওই চুক্তির বিরোধিতা করে আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়ারাভানে হাজার হাজার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রীকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়েও স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনেও ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে। তবে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে নিকোল পাশিনিয়ান বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধে এই চুক্তি মেনে নেওয়া ছাড়া তার কাছে আর কোনও বিকল্প ছিল না।