1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

“জলতরঙ্গ“ তপন সাহা

  • Update Time : রবিবার, ১০ মে, ২০২০
  • ২৩৫ Time View

জলতরঙ্গ,তপন সাহা

অতিমারীর এই সমুদ্র থেকে পৃথিবীকে বুকে ধরে উঠে আসতে চাইছি আমরা, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। অনেকেরই আশা পৃথিবী আবার ফিরে আসবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। এটাই আমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখে ঠিকই, তবে বাস্তব সত্যিটাও বুঝে নেওয়া জরুরী। মানব জীবন থেকে সমাজ জীবন পর্যন্ত, সে যেখানেই অঘটন ঘটুক না কেন, সম্পূর্ণ সেরে ওঠা কখনোই সম্ভব হয়নি, হয়তো হয়ও না। আসলে ব্যথা যন্ত্রনা সহ্য করার মনোবল বাড়িয়ে তুলে আমরা মেনে নিতে শিখি। ‘মন থেকে মেনে নিতে না চাইলেও মানিয়ে নিতে হয়,নইলে নিজেকে প্রতারণা করা হয়’। আর সেটাকেই আমরা বলি, ‘সেরে ওঠা’। মানিয়ে নিয়ে সেরে উঠবো বলেই, ঘরবন্দী আজ আমরা।

অনেক বন্ধু আশা করে আছেন, যেহেতু ঘরে আছি তাই অনেক কাজ করছি। না,বন্ধু। শুধু এইটুকু বলি, অনেক কাজ আমি কোনদিনই করতে চাইনি। চেয়েছিলাম সারা জীবনটা দিয়ে একটাই কাজ করতে। কিন্তু বিশ্বাস করুন, সেই সাধনায় বসতে পারিনি এই চঞ্চল মন নিয়ে। মনের সাথেই প্রেমে মজেছে মন। চুলোয় যাক সবকিছু। মাটির চুলাতেই মন পুড়িয়েছি জীবনের ১৮টা বছর। পুড়িয়েই নানা রঙে নেচেছি দু’হাত তুলে । সেই হাতেই পোঁড়ামাটিতে সাজিয়েছি টলিউড থেকে বলিউড, মাথার টায়রা থেকে পায়ের নূপুর দিয়ে। পাঞ্জা কষেছি সোনার ওজনের সাথে ‘এ সরকার এ্যান্ড জুয়েলার্স’ থেকে আরো অনেকের সাথেই। তারপর একদিন হাতঘড়ি থেকে জুতোর ফিতে সবই পোড়ামাটির। মিউরালে দেওয়াল জুড়ে কাচামাটি পাকা হয়েছে একসময়। জিতেই এসেছি বুক বাজিয়ে।

হেরেছি মাত্র একটি জায়গায়, বন্ধু অনুপম চক্রবর্তীর কাছে। চেয়েছিলো, পোড়ামাটিতে ওষুধের ক্যাপসুল, ট্যাবলেট বানাতে । পারিনি। অবশ্য ও নিজে হেরে গিয়ে জিতিয়ে দিয়ে চলেছে আজ কাগজ ছেঁড়ার ছবিতে।
এইটুকরো জীবনে মন বাঁচিয়েই বেঁচেছি এতকাল। ছুটেছি মনের খেয়ালে। তাই রাশি রাশি ভারা ভারা. অকাজ হল সারা। তাতেই বোঝাই হয়েছে জীবনের নৌকো। নতুন পৃথিবীর নতুন সওদাগরের কাছে যার তিলমাত্র মূল্য থাকবে না জানি। তবুও ধান ভাঙ্গা যার স্বভাব তার কাছে স্বর্গও যা, এই অতিমারীর বন্দীদশাও তাই।

যদিও বন্দীদশা আমাকে খুব একটা কাবু করতে পারিনি, বরঞ্চ আমিই তাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছি। কারণ আমি ঘরেই থাকি। আছি ঘরেই। তবে এই থাকাটা, আমি চাইনি। আমি যখন ঘরে থাকি, তখন বাইরের জগৎটা ব্যস্ত তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম নিয়ে,হাসি খুশি নিয়ে। এখনকার এই তছনছ হয়ে যাওয়াটা নিয়েই একটা মানসিক চাপ জমাট বেঁধেছে। বাড়িয়েছে বুকের হাঁপর। ক্ষয়ে গেছে জীবন থেকে কিছুটা সময়, হয়তো এভাবেই যাবে আরো কিছুদিন। সময় পথ দেখিয়ে দেবে আমাদের। অপেক্ষার জীবন এখন।

সেই জীবন এখন জানতে চাইছে, “পথ বলে দাও তুমি,কোন পথে যাই আমি,
কোনখানে গেলে মাগো,সান্ত্বনা পায় প্রাণ”।

প্রথম প্রথম সান্ত্বনা খুঁজতে গিয়ে অস্থিরতার সাথে ভাবনাকে মিশিয়েই কাটতো দিন, ফুরোতো জেগে থাকা রাত। মন বুঝতে শিখেছে সময়ের পাঁচনে। ছন্দে ফিরছি একটু একটু করে। ছিঁড়ছি কাগজ। জুড়ছি পোষ্টার। কি করতে চাইছি জানিনা নিজেই। জানার চেষ্টাও করি না। আমি তো দিনমজুর খাটি। খাটান তো সেই তিনি। শুতে যাবার সময় মজুরী জোটে ‘আশীর্বাদ’।

তবুও কেন জানিনা, মন জানতে চায়, নতুন কাজ কি কথা বলবে? কারা তাকে দিয়ে কথা বলাবে? কাদের সাথেই বা কথা বলবে সে। শুধুমাত্র রোটি, কাপড়া অর মকান সামলে নিতে নিতেই ‘আইসিইউ’তে থাকা আমরা একদিন কোমায় পৌঁচ্ছে যাবো। মনটাই মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে রোজকার দু’টো ফ্যানভাত যোগাড় করতে, সেখানে শিল্প, সাহিত্য, বিনোদনে মানুষ বাঁচবে কতক্ষণ?

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..