ওয়েব ডেস্ক: সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থী ও শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ চান। প্রধান উপদেষ্টা ছাড়া কারো সঙ্গে তারা আলোচনা করতে রাজি নন।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর হেয়ার রোডে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের কাছে নিজেদের এ চাওয়ার কথা জানান আন্দোলনকারীরা।
তারা বলেন, আমরা যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়ার পরে দুপুর ২টার দিকে চারজনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তারা আমাদের কর্ম কমিশনের একজন কমিশনারের পিএসের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন।
যমুনা থেকে বেরিয়ে আন্দোলনকারী রাসেল আল মাহমুদ বলেন, ভেতরে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনা হয়েছে। আমাদের বলা হয়েছে, সংস্কার উপদেষ্টা ড. আবদুল মুহিতের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা হচ্ছে। পরে যখন বললাম তার সঙ্গে আমরা কথা বলব। তখন তারা সময়ক্ষেপণ শুরু করেন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ৩৫-এর দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছি। বিভিন্ন সময় নানা জনের আশ্বাসও পেয়েছি। কিন্তু এখনো আমাদের দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। তাই আমরা কোনো কর্মকর্তা বা পিএসের সঙ্গে বসতে চাই না। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই। তার সঙ্গে কথা বলতে চাই। অন্যথায় আমাদের আন্দোলন চলবে।
আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছাত্রদের পক্ষের মানুষ। জনগণের আস্থা নিয়ে তিনি রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিয়েছেন। তার সঙ্গে কথা বললে তিনি আমাদের দাবি মেনে নেবেন। আমাদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলতে চাই।
সরেজমিনে দেখা যায়, সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলনকারীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনের রাস্তায় অবস্থান করছেন। পাঁচ শতাধিক চাকরিপ্রত্যাশী রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছেন। তাদের কেউ কেউ নানা স্লোগান দিচ্ছেন। অনেক চাকরিপ্রত্যাশী রাস্তায় শুয়ে পড়েছেন।
আন্দোলনকারীরা ‘বয়স না মেধা, মেধা মেধা; ৩০ না ৩৫, ৩৫, ৩৫; আর নয় কালক্ষেপণ, আজই প্রজ্ঞাপন’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন।
আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে সেনা সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আজ প্রথমে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে চলে আসেন। দুপুর সোয়া ১টার দিকে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পৌঁছানোর পর ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয় পুলিশ। সেখানে অবস্থান নিয়েই আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. ইসরাইল হাওলাদার বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে সভা-সমাবেশ করার বিষয়ে আগেই নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু আন্দোলনকারীরা পুলিশের নিষেধ অমান্য করে প্রধান উপদেষ্টার বাসার সামনে যায়। তাদের বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং সেখানে তাদের আমরা থাকতে দেব না। পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।