আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী আতশবাজি, নাচ-গান আর আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে নতুন বছরের সূচনা হলো। কিন্তু বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই যখন নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ায় ব্যস্ত তখন একটু নিরাপদ আশ্রয় আর খাবারের সন্ধানে গাজার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পালিয়ে বেরাচ্ছেন নিরীহ ফিলিস্তিনিরা।
সবাই যখন উৎসবে মেতে উঠেছেন তখন গাজার ঘরে-ঘরে শিশুদের কান্না, প্রিয়জন হারানোর শোকে স্বজনদের হাহাকার। একদিকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আলোর ঝলকানি, অন্যদিকে জ্বালানির অভাবে পুরো গাজা এখন অন্ধকারে ঢাকা।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। প্রায় তিন মাস ধরে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে সেখানকার আবাসিক স্থাপনা, মসজিদ, স্কুল এবং হাসপাতাল ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, গাজার কোথাও এখন নিরাপদ নয়। ফিলিস্তিনিরা জীবন বাঁচাতে যেখানেই আশ্রয় নিচ্ছে সেখানেই দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিরীহদের প্রাণহানি ঘটছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, গত ৮৫ দিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২৮ হাজার ৮২২ জন নিহত হয়েছে বা নিখোঁজ রয়েছে। এর মধ্যে ৯ হাজারের বেশিই শিশু।
এদিকে ফিলিস্তিনের তরুণরা বিবিসিকে জানিয়েছে, ২০২৪ সালে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চায়। তারা চায় ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত বন্ধ হোক।
তবে ফিলিস্তিনিরা চাইলেও ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান এই যুদ্ধ এখনই থামার কোনো লক্ষণ নেই। কারণ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি এ বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন।
তিনি আভাস দিয়েছেন যে, ফিলিস্তিনি এই উপত্যকা এবং অন্যান্য স্থানে লড়াই আরও কয়েক মাস চলতে পারে। এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, গাজার ক্ষমতাসীন হামাস সংগঠনের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই ১৩ সপ্তাহে প্রবেশ করেছে।
তবে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর লড়াই শুধু ওই অঞ্চলেই নয় বরং তা লেবানন, সিরিয়া, ইরাক এবং ইয়েমেনকেও জড়িয়ে ফেলেছে।
এখন এসব দেশের সঙ্গেও ইসরায়েলের সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। নেতানিয়াহু বলেন, দ্য ফিলাডেলফি করিডোর এবং আরও পরিষ্কার করে বলতে গেলে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে থাকা উচিত।