সাখাওয়াত হোসেন (পাবনা) জেলা প্রতিনিধি:
চালককে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের মূলহোতা সুমনসহ সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে ছিনতাই করা ১২টি ইজিবাইক, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (৪ মার্চ) দুপুরে পাবনা সদর থানায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান। গত বুধবার (২ মার্চ) থেকে টানা ৩৬ ঘণ্টা পাবনাসহ বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নাটোরের বড়াইগ্রামের খোয়াজ মোল্লার ছেলে শামীম মিয়া (২৫), চক বড়াইগ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৬), বড়াইগ্রামের বাজিতপুর এলাকার খোয়াজ মোল্লার ছেলে রফিকুল ইসলাম (২৪), কুষ্টিয়ার খোকশা থানার হেলালপুর গ্রামের দুলাল শেখের ছেলে মো. সুমন শেখ (৩০), পাবনার আটঘরিয়ার অভিরামপুর গ্রামের মৃত: তারো প্রামানিকের ছেলে বাচ্চু মিয়া (৪৫), আটঘরিয়ার দেবত্তর উত্তরপাড়া গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে বজলুর রহমান (২৪), ও আটঘরিয়ার অভিরামপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে হাসান আলী (২৫),
পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান জানান, গত বছরের ৩ ডিসেম্বরে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি পুকুর থেকে সদর থানার দক্ষিণ রাঘবপুর এলাকার তাজউদ্দীনের ছেলে ইজিবাইক চালক জাহাঙ্গীর আলমের (৬০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি সদর থানার মনোহরপুর মসজিদের সামনে থেকে শহরের সাধুপাড়ার খইম উদ্দিনের ছেলে ইজিবাইক চালক রইচ উদ্দিনের (৬০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দুইজনকে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ানোর পর হত্যা করে তাদের ইজিবাইক ছিনতাই করে নিয়ে যায় খুনিরা। তিনি জানান, প্রথম ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ধারণা করা হয় দুটি ঘটনায় একই চক্র জড়িত। একপর্যায়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকস টিম ও পাবনা সদর থানার একটি টিম ঈশ্বরদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ও ছিনতাইয়ের মাস্টারমাইন্ড সুমন শেখকে গ্রেপ্তার করে। সুমনের দেওয়া তথ্য মতে পাবনা, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ ও নাটোরের বিভিন্ন স্থান থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চক্রের সক্রিয় আরও ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হত্যার পর ছিনতাই হওয়া দুটি ইজিবাইক ও চোরাই আরও ১০টি ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও চোরাই ইজিবাইক বিক্রির ৩৪ হাজার টাকা ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত সাতটি ফোন জব্দ করা হয়। পুলিশ সুপার বলেন, এই চক্রটি একেবারে পেশাদার। সারা দেশে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা ইজিবাইক ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। এ বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।