সেলিম সানোয়ার পলাশ, রাজশাহী প্রতিনিধি: বাজারে পেয়াজের দাম বেশী থাকায় পেয়াজের বীজ চাষ বাদ দিয়ে পেয়াজ চাষে ঝুকেছে বরেন্দ্র অঞ্চলের চাষিরা। ফলে কমেছে পেয়াজ বীজের চাষ। সে সকল চাষীরা পেয়াজের বীজ চাষ করেছে তাদের ক্ষেতে পেয়াজের থোপা ভাল হয়েছে। এবার ফলন ও লাভের সম্ভাবনা বেশী রয়েছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে গোদাগাড়ী উপজেলায় পেয়াজের বীজ চাষ হয়েছে ৯০ হেক্টোর জমিতে। গত বছর চাষ হয়েছিল ১৩০ হেক্টোর জমিতে। গত বারের তুলনায় এ বছর ৪০ হেক্টোর জমিতে পেয়াজের বীজ কম চাষ হয়েছে। তবে এ উপজেলার মাটিকাটা, গোগ্রাম, দেওপাড়া ইউনিয় ও কাকন হাট এলাকায় বেশী পেয়াজের বীজ চাষ হয়েছে।
গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের ভাগাইল গ্রামের পেয়াজের বীজ চাষী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ৫-৬ বছর ধরে তারা পেঁয়াজ বীজের চাষ করে আসছেন। তিনি বলেন, এ বিঘা জমিতে বীজ তৈরী করতে ৫০,০০০টাকার মত খরচ হয়। বীজ হওয়ার পর বাজারে বিক্রি করে প্রায় লক্ষাধীক টাকা লাভ হয়।
চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা উভয়ে বলেন, জমিতে পাঁচ থেকে সাতটি চাষ দিয়ে মাটি ক্ষুদ্র আকার করে বেড তৈরী করতে হয়। সেইসাথে বেডের পাশ দিয়ে ছোট ছোট নালা তৈরী করতে হয়। যাতে করে জমিতে পানি আটকে থাকতে না পারে। এরপর বিঘাপ্রতি প্রায় ছয় মন করে দেশী (ছাঁচি) জাতের পেঁয়াজের আল কিংবা তিন থেকে সাড়ে তিনমন পেঁয়াজের কন্দ জমিতে রোপন করতে হয়।এই কন্দ গুলো ৫-৬ ইঞ্চি পর পর রোপন করতে হয়। আর সাড়ি করতে হয় ২ ফিট পরপর। এগুলো রোপনের সময় বিঘাপ্রতি পরিমান মত জৈব সার, দস্তা ২ কেজি, পটাশ ২০ কেজি, বরুন ২ কেজি ও ইউরিয়া সার ১০ কেজি প্রয়োগ করতে হয়। এতে চারা ভাল হয় এবং বীজও ভাল ও উন্নত মানের হয়।
মাটিকাটা ইউনিয়নের ভাটোপাড়া গ্রামের তারেক ইকবাল বলেন, এবার অল্প জমিতে পেয়াজের বীজ চাষ করেছি। ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবিঘা জমিতে তিন থেকে সাড়ে তিন মন করে বীজ উৎপাদন হয়। কোন কোন বছর সামান্য কমও হয়। বর্তমানে বাজারে প্রতিমন বীজের মূল্য প্রায় পঁয়তাল্লিশ হাজার থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা। বছর চারেক পূর্বে প্রতিমন বীজের মূল্য ছিলো নব্বই থেকে পঁচানব্বই হাজার টাকা। তারা পেঁয়াজ বীজের মূল্য নির্ধারণ করার জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানান।
এদিকে পেঁয়াজ বীজ চাষ কম হওয়ার কারন হিসাবে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, এবার পেঁয়াজের দাম অনেক বেশী। এই কারণে কৃষক বীজ চাষ কমিয়ে দিয়ে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তিনি আরো বলেন, বীজ ক্ষেতে কিটনাশক ব্যবহার না করাই উত্তম। কারন কিটনাশক বেশী প্রয়োগ করলে মৌমাছি ফুলের উপর বসলেই মারা যায়। এতে পরাগায়ন হতে সমস্যা হয়। ফলে ফলন কম হয় বলে জানান তিনি।