দৈনিক প্রত্যায় ডেস্কঃ বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেই সাথে বাড়ছে আক্রান্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যাও। এ হারে চিকিৎসা সেবাকর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে অতি শিঘ্রই চিকিৎসাব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। এরকম ভয়ংকর পরিস্থিতির আশংকা করছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগণ।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী- সারা দেশে আজ সকাল ১১টা পর্যন্ত ২৫১ জন চিকিৎসক এবং দেড় শতাধিক স্বাস্থ্য সেবাকর্মী করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। গতকাল পর্যন্ত আক্রান্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ছিল ২৩১ জনে। একদিনেই আক্রান্ত চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে ২০ জন।
এ প্রসঙ্গে চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ ডক্টরস ফোরাম (বিডিএফ)-এর প্রধান সমন্বয়ক ডা. নিরুপম দাশ রেডিও তেহরানকে জানান, চিকিৎসক ও সেবাকর্মীরা যে হারে আক্রান্ত হচ্ছেন তা যদি আব্যাহত থাকে এবং তাদের জন্য সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা না হয় তবে আগামী দশ দিনের মধ্যে গোটা চিকিৎসা ব্যবস্থাই কলাপস করবে।
ওদিকে, চট্টগ্রামে জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বলেছেন, এতদিন আমরা চিকিৎসকদের নানাভাবে দোষারোপ করে এসেছি। কিন্তু কখনো স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনাকে খতিয়ে দেখার চেষ্টা করিনি। এখন সকলের কাছে তা পরিষ্কার হয়ে গেল। তাতে যে ক্ষতি হওয়ার তা হয়েই গেছে।
তিনি বলেন, ডাক্তাররা কেবল নিজেদের নিরাপত্তা দাবি করছে ব্যাপারটা এরকম না। রোগীদের নিরাপত্তার জন্যই কিন্তু তারা নিজেদের নিরাপত্তা চাইছে। ডাক্তাররা আগে সুরক্ষিত থাকা বা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপদ রাখা মানে রোগীদের নিরাপদ রাখা।
স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
করোনায় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতি একটি উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ করা হয়েছে যে, তিনি ইতোপূর্বে ডাক্তারদেরকে স্বয়ংসম্পূর্ণ বা কার্যকর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট সরঞ্জামাদি অর্থাৎ (পিপিই) সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে ই-মেইলের মাধ্যমে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান (রবিন)।
আইনজীবী মো. জে আর খান তার নোটিশে ডিজিকে দ্রুত পদত্যাগ করতে আহ্বান জানিয়ে সতর্ক করে বলেছেন অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইননানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে, এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ডক্টরস ফোরাম (বিডিএফ)-এর প্রধান সমন্বয়ক ডা. নিরুপম দাশ বলেছেন, শুধু ডিজি একা কেন, তার সাথে অন্য যারা সংশ্লিষ্ট তাদেরকেও দায়িত্বে গাফেলতির জন্য দায়ী করা দরকার।
আইনজীবী তার নোটিশে আরও বলেন, সার্বিক বিবেচনায় ডিজি প্রফেসর মো. আবুল কালাম আজাদ তার পদ থেকে এর পূর্বেই পদত্যাগ করা যুক্তিযুক্ত ছিল। কিন্তু তিনি তা করেন নাই, তাই নোটিশ পাঠিয়ে নোটিশ প্রাপ্তির পর যত দ্রুত সম্ভব পদত্যাগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং তার অবিবেচক কার্যকালাপের জন্য সৃষ্ট সব ধরনের ক্ষতির জন্য তিনি দায়ী থাকবেন।