আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সৌদি বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিন সালমান দেশের ওপর আরোপিত কারফিউ আংশিকভাবে তুলে নিতে এক ফরামান জারি করেছেন, যা আজ রোববার থেকে কার্যকর হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম মক্কা।
দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সৌদি গেজেট।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত মাসেই দেশজুড়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারফিউ জারি করেছিল সৌদি সরকার। কিন্তু রমজান উপলক্ষে দেশটির সকল অঞ্চলের ওপর থেকে কারফিউ আংশিকভাবে তুলে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সৌদি বাদশাহ। ফলে রোববার থেকে মক্কা ব্যতীত সেখানকার সব শহরের কারফিউ সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শিথিল করা হচ্ছে। এসময় শহরের লোকজন বাইরে আসতে পারবে।
তবে এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম মক্কা নগরী। পবিত্র এই নগরীতে ২৪ ঘণ্টাই কারফিউ বলবৎ থাকছে। সেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি সরকার।
এদিকে কারফিউ শিথিল করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সৌদিতে কিছু অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালু করারও নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এই ফরমানের ফলে শপিংমলের পাশাপাশি পাইকারি ও খুচরা দোকানও খুলতে পারবে। ব্যবসায়ীরা আগামী বুধবার (২৯ এপ্রিল) থেকে শুরু করে ১৩ মে পর্যন্ত দীর্ঘ দুই সপ্তাহ ধরে এসব দোকান খোলা রাখতে পারবেন। তবে বরাবরের মতোই বন্ধ থাকছে বিউটি পার্লার, সেলুন, জিম, সিনেমা ও রেস্তোঁরাগুলো। মল খুললেও সেখানে থাকা এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না। বাদশাহের এই নির্দেশনা যাতে লঙ্ঘিত করা না হয় সে বিষয়টিও কড়াকড়িভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাস ও ঈদকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সুপারিশের ভিত্তিতে কিছু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সৌদি বাদশাহ। ফলে মক্কা ছাড়া সৌদি আরবের অন্যান্য শহরের নির্মাণ কোম্পানি ও বিভিন্ন কারখানাগুলো রমজান জুড়ে নিজেদের ব্যবসা চালু রাখতে পারবে।
তবে তারা যাতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এসব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় সেদিকে কঠোর দৃষ্টি রাখবে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়সহ যথাযথ কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও শিল্পকৌশল কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সৌদি আরবের সিক্যুরিটি এজেন্সিগুলোকে এই মর্মে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তারা যেন ‘সামাজিক দূরত্ব’নিশ্চিত করার বিষয়টির দিকে কড়াকড়িভাবে নজর রাখেন। এমনকি বিবাহের ও শোক প্রকাশের মতো সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতেও যেন পাঁচ জনেরও বেশি মানুষ সমাবেত হতে না পারেন।
সরকারের এইসব নির্দিশ অমান্য করলে জেল ও জরিমানার মতো শাস্তি ভোগ করতে হবে।
প্রসঙ্গত সরকারি হিসাবে সৌদি আরবে রোববার সকাল পর্যন্ত ১৬ হাজার ২৯৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে যাদের এক চতুর্থাংশই মক্কার। দেশটিতে মারা গেছে সবমিলিয়ে ১৩৬ জন। সেখানে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে আরও ২ হাজারের বেশি মানুষ। তবে এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার মানুষ।
দৈনিক প্রত্যয়/ আন্তর্জাতিক/ জাহিরুল মিলন