ওয়েব ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বরেণ্য চিত্রশিল্পী জয়নুল আবেদিন ১৯১৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামবাংলার নৈসর্গিক সৌন্দর্য, সাধারণ মানুষের সহজ-সরল জীবনযাত্রা, মানুষের দুঃখ-দুর্দশা ও সংগ্রামই ছিল তার চিত্রকর্মের মূল উপজীব্য।

শুক্রবার (২৮ মে) শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

আবদুল হামিদ বলেন, জয়নুল আবেদিনের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। ১৯৩৮ সালে সর্বভারতীয় চিত্রকলা প্রদর্শনীতে আঁকা জলরঙের ছবির জন্য স্বর্ণপদক লাভ করেন তিনি। জয়নুলের কর্মে প্রতিভাত হয়েছে সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নর-নারীর শ্রম ও সংগ্রাম এবং সেই সঙ্গে তাদের ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।

তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় স্টাইলে চিত্রাঙ্কনের ওপর লেখাপড়া করলেও প্রাচ্য বা পাশ্চাত্যের অঙ্কনধারা তাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। অতিমাত্রায় রীতিনির্ভরতার পরিবর্তে বাস্তবতার প্রতি আকৃষ্ট হন জয়নুল। এ বরেণ্য শিল্পীর কল্পনার রেখা ও তুলিতে ভাস্বর হয়ে উঠেছে ১৯৪৩ সালের ‘দুর্ভিক্ষের রেখাচিত্র’, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে ‘নবান্ন’, ১৯৭০ সালে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে লাখো উপকূলবাসীর মৃত্যুতে ‘মনপুরা’র মতো হৃদয়স্পর্শী চিত্র। শিল্পীর কালজয়ী শিল্পকর্ম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও বিপুল প্রশংসা ও স্বীকৃতি লাভ করেছে। অসাধারণ শিল্প-মানসিকতা ও কল্পনাশক্তির জন্য তিনি শিল্পাচার্য উপাধিতে ভূষিত হন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, শিল্পাচার্য জয়নুলের উদ্যোগে ১৯৪৮ সালে ঢাকা আর্ট কলেজ (বর্তমানে চারুকলা ইনস্টিটিউট) প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং শিল্পাচার্য জয়নুলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৭৫ সালে সোনারগাঁয়ে লোকশিল্প জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়। ময়মনসিংহে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা গ্যালারি। জয়নুলের শিল্পকর্ম আগামী প্রজন্মকে সৃজনশীল কাজে নিরন্তর অনুপ্রেরণা জোগাবে। বিশ্বখ্যাত এ বরেণ্য শিল্পী ১৯৭৬ সালের ২৮ মে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। শিল্পাঙ্গনে তার অনবদ্য অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। আমি বরেণ্য এ শিল্পীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।