প্রত্যয় ডেস্ক: প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কালোরা। এ উদ্দেশ্য সামনে নিয়ে কালোদের একটি গ্রুপ সশস্ত্র প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ গ্রুপটির নাম অল-ব্লাক গ্রুপ। কিন্তু তারা নিজেদের বলে নট ফাকিং অ্যারাউন্ড কোয়ালিশন বা এনএফএসি। সিএনএন।
অল-ব্লাক গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জন ফিটজগেরাল্ড জনসন জানিয়েছেন, গ্রীষ্মকালজুড়ে প্রশ্নবোধক পুলিশিংয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় হতাশা এবং পুলিশের হাতে অসংখ্য কালো মানুষের মৃত্যুর প্রতিবাদে তারা সংগঠিত হয়েছেন। বিভিন্ন শহরে গ্রুপটির সদস্যরা জড়ো হয়ে তাদের উপস্থিতি জানান দিয়েছে এবং মানুষের সমালোচনার কারণ হয়েছে।
বিশেষত লাফায়েটে ও আরেকটি এলাকায় তাদের র্যালি থেকে গুলি ছোড়ার ঘটনায় বেশি সমালোচনা তৈরি হয়। অল-ব্লাক গ্রুপটি মূলত যাত্রা শুরু করে ২০১৭ সালে। গ্রুপটি জর্জিয়ার স্টোন মাউন্টেনে আহমাউদ আরবেরির নামে তৈরি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় স্মৃতিশোধ তুলে নেয়ার দাবি করে। এছাড়া আরও বিভিন্ন স্থানে কালোদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অবসানের দাবিতে তারা র্যালি-সমাবেশ করেছে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন গ্রুপ মিছিল-সমাবেশ করছে। এর মধ্যে বিভিন্ন সাদা গ্রুপও মার্কিন সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনীতে দেয়া অস্ত্র বহনের অধিকার দাবি করছে। অল-ব্লাক গ্রুপের জনসন অবশ্য বলছেন, অন্য গ্রুপগুলোর মতো তাদের দল।
তারা মূলত সংগঠিত হয়েছে যুগ যুগ ধরে চলা পুলিশি বর্বরতা ও বর্ণবৈষম্যের অবসানের লক্ষ্যে। এনএফএসির সদস্যরা মূলত তাদের নারী-পুরুষ ও শিশুদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত হওয়া অশ্রদ্ধা ও দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ নেই। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নিজেদের সুরক্ষা ও আত্মরক্ষার অংশ হিসেবে কালোদের অস্ত্র চালানো শেখানো। এটি সংবিধানে তাদের দেয়া অধিকারই। যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত কালোদের সংঘবদ্ধ বড় গ্রুপ চোখে পড়ে না।
১৯৬৬ সালে ম্যাথিউ জনসনকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করার পর গড়ে ওঠে ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টি। এখন অল-ব্ল্যাক পার্টি দেখা যাচ্ছে। জনসন বলছেন, অন্য কোনো গ্রুপ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে বা অস্ত্র ধরলে কেউ সমালোচনায় হামলে পড়ে না। কিন্তু কেবল কালোরা করলেই বিরুদ্ধে লেগে পড়ে। অথচ মার্কিন নাগরিকরা চামড়ার কালার বিবেচনায় না নিয়েই সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করতে পারে। নিজেদের অধিকার ভোগ ও সুরক্ষার দাবি নিয়ে কেন্টাকি, জর্জিয়া ও লুইজিয়ানায় সমাবেশ করেছে কালোরা।
কালো শার্ট, কালো প্যান্ট, কালো বুট, কালো মাস্ক ও কালো রাইফেল নিয়ে ২৫ জুলাই লুইসভিলে কালোদের শক্তি দেখানোর মিছিল বের করে তারা। কালোদের এই শক্তি প্রদর্শন কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগের কারণ হয়ে এসেছে। লুইসভিল মেট্রো কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডেভিড জেমস বলেন, মানুষ রাস্তায় অস্ত্র নিয়ে ঘুরবেন- নগর কর্মকর্তারা এমনটি চান না।
কালোদের অস্ত্র প্রদর্শন অন্য গ্রুপগুলোকেও উৎসাহিত করছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আমেরিকান ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ক্যারোলিন গালাহার বলেন, সশস্ত্র গ্রুপগুলো একভাবে পুলিশি পর্যবেক্ষণের আওতায় আনার সুযোগ নেই। কারণ প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব নিয়ম-কানুন রয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষকে খুবই সতর্ক অবস্থান নিতে হবে।
এর আগে আর্মি ফর ট্রাম্পসহ বিভিন্ন সাদা গ্রুপেরও নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নির্বাচনের ফল নিয়ে সংশয় এবং ডাকযোগে দেয়া ভোটের ফল নির্ধারণের কারণে বিজয়ী প্রার্থী নির্ধারণে অনেক সময় লেগে যেতে পারে- এ কারণে উভয় প্রার্থীর সমর্থকরা পূর্বপ্রস্তুতি নিচ্ছেন।
প্রাউড বয়েজসহ বিভিন্ন শ্বেতাঙ্গ উগ্রপন্থীদের প্রস্তুতির খবরের পর এবার কৃষ্ণাঙ্গদের পরিবর্তনের দাবি নিয়ে সশস্ত্র প্রস্তুতির খবর এলো। এবারের মার্কিন নির্বাচনে বিরল এক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সবাই।