সেলিম সানোয়ার পলাশ, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর মোহনপুরে ত্রাণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে মৌগাছি ইউনিয়নের বিদিরপুর গ্রামের ঘরবন্দি শতাধিক মানুষ দিনমজুররা। সোমবার (১৩ এপ্রিল) সকালে এই মানববন্ধনে শতাধিক মানুষ অংশ নেয়।
তাদের দাবি, এলাকার শতাধিক মানুষ করোনাভাইরাসের কারণে সরকারি নির্দেশনা মেনে ঘরে থাকতে গিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। এখনও তাদের ঘরে পৌছায়নি সরকারি কিংবা ব্যক্তিগত কোন ত্রাণ। খাবারের তারা ত্রাণের আশায় সড়কে নামতে বাধ্য হয়েছে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, তারা দিন আনে দিন খায়। কিন্তু বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে সরকার তাদেরকে ঘরে থাকতে বলেছে। এমন অবস্থায় তারা ঘরে থাকতে গিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনানিপাত করছে। বর্তমানে তাদের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, তাদের কাছে জরুরিভাবে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া না হলে তারা সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে পেটের খাবার যোগাতে কাজের সন্ধানে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।
তারা আরও জানায়, ত্রাণের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যন, মেম্বারদের কাছে গেলে তারা বলেন, যে ত্রাণ পেয়েছেন, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। ফলে তারা ত্রাণ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। আগামীতে ত্রাণ আসলে তাদের দেওয়া হবে বলে বিদায় করে দিচ্ছেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, বর্তমান করোনা সংক্রমনরোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে ঘরবন্দি মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে সরকার ত্রাণ সামগ্রী হিসাবে চাল, ডাল, তেল, লবন, আলু, নগদ টাকাসহ নানা রকমের জিনিস দিচ্ছে, কিন্তু তাদের কাছে সরকারের দেয়া এসব ত্রাণ সামগ্রীর কিছুই পৌঁছায়নি।
মৌগাছি ইউপি কৃষকলীগের ওয়ার্ড সভাপতি লিকায়ত আলী ও মুদি দোকানদার সোহাগ অভিযোগ করে বলেন, ত্রাণ দূরে থাক, এই এলাকার সাধারণ দিনমজুর মানুষগুলোকে আজ পর্যন্ত সচেতন করতে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি মৌগাছি ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৌগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল-আমিন বিশ্বাস বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু ত্রাণ এসেছে, তা সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা হয়েছে। যারা ত্রাণ পায়নি, তাদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। আগামীতে তাদের মধ্য ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, করোনা সংক্রমণরোধে বিভিন্ন বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিদিরপুর হাটটি উপজেলার উৎপাদিত সবজি বিক্রির প্রধান হাট। তা বন্ধ থাকায় স্থানীয়রা উৎপাদিত সবজি হাটে বিক্রি করতে পারছে না। ফলে এ এলাকার লোকজনের মধ্য চরম অভাব দেখা দিয়েছে। তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রির জন্য হাটটি প্রশাসনের মাধ্যমে বসতে দেওয়া হলে তারা সেখানে সবজি বিক্রি করে প্রয়োজনীয় বাজার করতে পারতো।
এদিকে, মানববন্ধনের কথা শুনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানওয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট লিটন দে, সেনাবাহিনীর টহল টিম, মোহনপুর থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ, ইউপি চেয়ারম্যান আল-আমিন বিশ্বাস। তারা ত্রাণ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়া লোকজনকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। প্রশাসনের আশ্বাসে তারা বাড়ি ফিরে যায়।