বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:
লকডাউনের জেরে যে মদ্যপায়ীরা মারাত্মক সমস্যার মধ্যে পড়ে গিয়েছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় বারবার তাঁদের আর্তি ও আবেদন দেখা গিয়েছে। কোথাও কোথাও আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটতে শোনা গিয়েছে। কোনও কোনও পরিবারে আবার দাম্পত্য কলহ ব্যাপক বেড়েছে। আর তা পেছনে নাকি রয়েছে পরিবারের কর্তার মদ না পাওয়া।
এমনকী, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের তরফে অত্যাবশ্যক সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার বিবরণ দিয়ে প্রকাশ করা নম্বরে ফোন করে বহু ব্যক্তি নাকি মদ পাঠানোর জন্যেও অনুরোধ করেছেন। মদ্যপায়ীদের এমনতর আবদার বেড়ে যাওয়ায় অনেক সংগঠন নাকি এমন উদ্যোগই বন্ধ করে দিয়েছেন।
তবে পরিস্থিতির বিবেচনা করে কিছু রাজ্যের কোনও কোনও অঞ্চলে অনলাইনে মদ বিক্রি চালু হওয়ার খবরও প্রকাশ্যে এসেছিল। পরে সে সবের অধিকাংশই বন্ধ হয়ে যায়। লকডাউনের জেরে প্রথম দিকে বাঁকা পথে মানে বেশি দামে বিভিন্ন ব্যক্তি গোপনে মদ বিক্রি করছে বলে অভিযোগও পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধিতে সেই বিক্রিও কমে গিয়েছে। কারণ, তাদের কাছেও মদের স্টক ফুরিয়ে আসছে বলে ইতিউতি শোনা যাচ্ছে। যে টুকু পাওয়া যাচ্ছে, সেই দামও নাকি আকাশছোঁয়া।
এমতাবস্থায় একটি অভিনব চুরির খবর পাওয়া গেল সোমবার। ঘটনাটি কলকাতার বড়বাজারের। পুলিশ সূত্রে খবর, আর্মেনিয়ান স্ট্রিটের একটি মদের দোকানে পিছনের দেওয়ালে একটি গর্ত দেখা যায়। গর্তটির আয়তন একটু কষ্ট করে হলেও একটি মানুষের ঢুকে যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। সেই গর্ত নজরে পড়তেই ওই দোকানের মালিকের সন্দেহ হয়। স্বভাবতই রহস্যের কিনারা করতে তিনি দোকান খোলেন। খুলে তাঁর চক্ষু চড়কগাছ! দোকান থেকে উধাও অনেক মদের বোতল। দোকানে পরীক্ষা করে দেখেন, আর কিছু খোয়া যায়নি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বড়বাজার থানায় খবরটি জানান।
পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘটনাটি যে চমকপ্রদ, তা স্বীকার করে নিয়েছেন অনেক পুলিশ আধিকারিকই। অবশেষে বড়বাজার ও জোড়াবাগান এলাকা থেকে পাঁচজনকে পাকড়াও করা হয়। তারা হল মহম্মদ ইমরান, রবিউল ইসলাম, মহম্মদ ইমরাত, মহম্মদ শেরু এবং মহম্মদ শোয়েব। ধৃতদের জেরা করে বেশ কিছু মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, লকডাউনের সুযোগ নিয়ে এই বোতলগুলি অত্যধিক দামে এরা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দিত। উল্লেখ্য, লকডাউনের নিয়মভঙ্গ করে বেশি দামে মদ বিক্রির অভিযোগে এর আগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছবি: প্রতীকী