ওয়েব ডেস্ক: সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেছেন, সমাজে ন্যায়বিচার না থাকলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটতে থাকে। সাংবাদিক রোজিনার প্রতি সংঘটিত ঘটনাটিও তেমন। আমাদের আন্দোলনের দুই ধরনের ধারাকে দেখতে হবে। এ ধরনের ঘটনা বন্ধে দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
মঙ্গলবার (১ জুন) নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ‘সংবিধান, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের নিগ্রহ’ বিষয়ে অনলাইন মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
সভায় মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির চেয়ারপারসন ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম। সভা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক অ্যাড. মাকছুদা আখতার লাইলী।
লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতীয় কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম। মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য দেন নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, জাতীয় কমিটির সদস্য বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম।
এছাড় মানবাধিকার কর্মী অ্যাড. সুলতানা কামাল, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাংবাদিক বাসুদেব ধর, অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক তাসলিমা ইয়াসমিন, আদিবাসী নেতা সঞ্জীব দ্রং, রাষ্ট্র বিজ্ঞানী ড. রওনক জাহান, ডা. রশিদ-ই -মাহবুবসহ জাতীয় কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।
মানবাধিকার কর্মী অ্যাড. সুলতানা কামাল বলেন, এ দেশের মালিক জনগণ। দুর্নীতিমুক্ত জীবন যাপনের অধিকার তাদের আছে। একজন সাংবাদিককে হেনস্তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সংবিধানে বর্ণিত সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, তথ্য চুরির অপবাদ দিয়ে, তল্লাশির নামে একজন সাংবাদিককে হেনস্তা করা হয়েছে। সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইন করতে হবে। সংবাদ মাধ্যমে স্বাধীনতা না থাকলে গণতন্ত্র, রাষ্ট্র এগোতে পারে না।
সভায় বক্তারা বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের প্রকাশিত খবরগুলো অত্যন্ত বস্তুনিষ্ঠ। রোজিনা ইসলামকে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তারা বলেন তার কাজটা অত্যন্ত প্রশংসার দাবি রাখে। হঠাৎ তার হেনস্তার খবর আমাদের হতবাক করে। যারা দেশের জন্য ভালো কাজ করে তাকে সরকার পুরস্কৃত না করে কেন হেনস্তা করল এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
কেন সচিবালয়ের কর্মকর্তারা আইন নিজের হাতে তুলে নিল? সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক আইনগুলো রদ করতে করণীয় সম্পর্কে, সামাজিক অনাচারের প্রেক্ষিত থেকে বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র পরিচালকরা দুর্নীতিতে শূন্য সহনশীলতার কথা বললেও বাস্তবে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে।
দুর্নীতি প্রতিরোধেএদেশের জনগণের দায় আছে, সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেকে কাজ করতে পারে। এখানে বাংলাদেশ এক লজ্জাজনক অবস্থায় আছে। আমাদের রাষ্ট্র এখনো নাগরিকের রাষ্ট্র হতে পারেনি। সাংবাদিকদের দায়িত্ব থাকে সমাজের অসঙ্গতিগুলো সকলের সামনে তুলে ধরা। অথচ এখানে কাজ করতে গিয়ে অনাচারের দিকটি দেখা যাচ্ছে।