আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ন্যাটো বাহিনীর সব সদস্যের আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে নির্ধারিত এই সময়ে মধ্যে যদি সব বিদেশি সেনা আফগানিস্তান ছেড়ে না যায় তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তালেবান। এর আগে সব সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, আফগানিস্তানে কিছু সেনা থেকে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, কাবুলে অবস্থিত বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশন এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এক হাজার বিদেশি সেনা আফগানিস্তানেই থেকে যাবে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই মার্কিন সেনা। সম্প্রতি আফগানিস্তানের বৃহত্তম ঘাঁটি ছেড়েছে বিদেশি সেনারা। দীর্ঘ দুই দশক পর আফগানিস্তানের বৃহত্তম ঘাঁটি ছাড়ল তারা।
গত শুক্রবার তারা বাগরাম বিমান ঘাঁটি খালি করে দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেন এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা। এরপরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হওয়ার পরও কিছু মার্কিন সেনা দেশটিতে থেকে যাবে।
সে সময় বাইডেন বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কাজ অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী যাতে দেশের নিরাপত্তা রক্ষা করার মতো শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে সেজন্য আফগান জনগণের উচিত নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতা করা। আফগান সৈন্যরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠলে আমরা আমাদের সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করব।
এদিকে আফগানিস্তানের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র কান্দাহার পুনরায় দখলে নিয়েছে তালেবান। বেদখল হওয়ার আগে অঞ্চলটি তালেবানের পুরাতন দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। শনিবার রাতে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের মাধ্যমে শহরটি দখলে নেয় তালেবান। গত ২৪ ঘণ্টায় তালেবান আফগানিস্তানের আরও ১৩টি জেলা নিজেদের দখলে নিয়েছে। এনিয়ে দেশটির ৩৭২টি জেলার মধ্যে তালেবানের দখলে এলো ১১০টি জেলা।
আফগানস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে আশরাফ ঘানি সরকারের মধ্যে হতাশা বেড়েছে। কারণ একের পর এক জেলা দখল করে নিচ্ছে তালেবান।
এদিকে তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন বলেন, কাবুলকে সামরিকভাবে দখল করা ‘তালেবানের নীতি নয়’। অপরদিকে কাতার থেকে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হওয়ার পর কোনও বিদেশি সেনা এমনকি সামরিক বাহিনীর ঠিকাদাররাও কাবুলে অবস্থান করতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি তারা দোহার চুক্তির বিরুদ্ধে গিয়ে তাদের বাহিনীকে এখানে রেখে যায় তবে সেক্ষেত্রে আমরা কি করব তা আমাদের শীর্ষ নেতারা সিদ্ধান্ত নেবেন। আমাদের অবশ্যই এতে প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন আমাদের নেতারা।’
কূটনীতিক, এনজিওর সদস্য এবং অন্যান্য বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে হামলার বিরোধিতা করে তিনি বলেন, আমরা বিদেশি সেনাদের বিরুদ্ধে, কূটনীতিক, এনজিওর সদস্য বা অন্য কোনও বিদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে না। আমরা তাদের জন্য হুমকি না।