প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক: রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের স্বীকার হলেন লিমনঃ দাবী লিমন সমর্থকগোষ্ঠীর
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমনকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নগরীর মেহেদিবাগ এলাকায় ইকুইটি নামের একটি ভবনের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে রাত দেড়টার দিকে সাদা পোশাকের ‘ডিবি পুলিশ ‘পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে গেছে দাবি করেছেন লিমনের বড় ভাই খায়রুল আলম ইমন।
ইমন জানান, বর্তমানে লিমন সবগুলো মামলায় জামিনে আছেন। লিমনের বিরুদ্ধে কোনো ওয়ারেন্ট নেই। নিয়ে যাওয়ার সময় লালদিঘীর ডিবি অফিসে নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সাদা পোশাকের ওই টিম।
লিমনের বড় ভাই ইমন আরও জানান, কেন লিমনকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে সাদা পোশাকের টিম তাদেরকে কিছুই জানাননি।
পরে তারা লালদিঘীর ডিবি অফিসে গেলে সেখানে লিমনের অবস্থান নিশ্চিত হন। তবে তাদেরকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি বলেও দাবি তার।
এদিকে সাইফুল আলম লিমনকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টির সত্যতা যাছাইয়ের জন্য ডিবি পুলিশের একাদিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি রাত দুটা থেকে। ডিবি দক্ষিণের এডিসি ও সিএমপির মুখপাত্র মির্জা সায়েম মাহমুদকে পাওয়া গেলেও তিনি এ বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেননি।
এই দিকে আটকের সময় অস্বাভাবিক কোন কিছু ছিলনা বলে সূত্রে জানা যায়। কিন্তু অস্বাভাবিক কিছু দিয়ে চালান করে দেওয়ার আশংকা করছেন লিমনের সমর্থক গোষ্ঠী।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মধ্যে মেধাবী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন সাইফুল আলম লিমন। দীর্ঘসময় বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি না থাকায় সেখানে কোন পদে অধিষ্ঠিত হতে পারেননি ঠিকই, তবে কেন্দ্রে জায়গা করে নিয়েছিলেন। সাংগঠনিক দক্ষতাবলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য থেকে সহ সম্পাদক পর্যন্ত হয়েছিলেন। চট্টগ্রাম মহানগরের দক্ষ যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত। হুট করেই আয রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মধ্যরাত একটার দিকে ডিবির একটি দল বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন। (বিস্তারিত আসছে)
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩-২০০৪ শিক্ষাবর্ষে সাইফুল আলম লিমন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন। শুরুতেই ছাত্রলীগের সামনের সারিতে চলে আসেন। শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক গ্রুপ ‘সিক্সটি নাইন’ গড়ে তুলেন লিমন। সেই সিক্সটি নাইনের ক্যম্পাসে এখনো প্রগতিশীল রাজনীতির ধারক ও বাহক হিসেবে পরিচিত।
২০০৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যে কমিটি গঠিত হয় সেটি কার্যকর ছিল ২০১১ সাল পর্যন্ত। এর ফলে লিমন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটিতে কোন পদ পায়নি। লেখাপড়া শেষ হয়ে যাওয়ায় ২০১১ সালে গঠিত ছাত্রলীগের মামুন-খালেদ কমিটিতেও তার জায়গা হয়নি।
তবে রিপন-রোটনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্য হিসেবে জায়গা করে নিতে পেরেছিলেন সাইফুল আলম লিমন। এরপর সোহাগ-নাজমুলের কমিটিতে সহ সম্পাদক পদ পান লিমন।
তবে সহ সম্পাদক থাকা অবস্থায় লিমন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে ‘নাছির গ্রুপ’র অঘোষিত নেতৃত্বে ছিলেন।
সূত্রমতে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রমুখ সিনিয়ার নেতা লিমনের হাতে গড়া । চুয়েট ছাত্রলীগের একাংশের উপরও লিমনের প্রভাব আছে। এছাড়া পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিমেল সাইয়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগ গঠিত হয় লিমনের উদ্যোগে। সাংগঠনিক রাজনীতির জন্য সর্বজননবিদিত এই ছাত্রনেতার হঠাত গ্রেফতারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রমুখ ছাত্রনেতারা।