দৈনিক প্রত্যয় ডেস্ক:
সাভারে বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে সড়কে ব্যারিকেড এবং আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে প্রায় ১০টি পোশাক কারখানার প্রায় সহস্রাধিক শ্রমিক। রবিবার সকালে তেঁতুলঝোড়া, কলমা, কবিরপুর, জামগড়া এলাকায় পৃথক এ শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে।
সকালে সাভারের কবিরপুর এলাকায় অবস্থিত ত্বো-হা টেক্সটাইল কারখানার তিন শতাধিক শ্রমিক মার্চ মাসের বেতনের দাবিতে কারখানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদেরকে সড়ক থেকে সড়িয়ে দিলে শ্রমিকরা বাড়ি চলে যায়।
অন্যদিকে সাভারের কলমা এলাকার সেঞ্চুরি গার্মেন্টস এর চার শতাধিক শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে তারা সিএন্ডবি-আশুলিয়া সড়কে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।
এছাড়া বকেয়া চার মাসের বেতনের দাবিতে সাভারের তেঁতুলঝোড়া এলাকায় অবস্থিত রাকেফ এ্যাপারেল্স কারখানায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে তারা পাওনা আদায়ের জন্য হেমায়েতপুর-সিংগাইর সড়কে টায়ার এবং কাঠে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন।
একইসাথে সাভারের উলাইল এলাকার জয়েনটেক্স, ফুলবাড়িয়া এলাকার দ্যা ক্লোথ ফ্যাশন, আর এম সোয়েটার, আশুলিয়ার জামগাড়া এলাকার পাইওনিয়ারসহ বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া শ্রমিকরা বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে বেতন পাইনা। ঘরে খাবার নাই, বেতন না পাওয়ায় খুব কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে। বাড়িওয়ালা এবং দোকানদারও টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। এই মহামারির সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে সব জায়গায় ত্রাণ দেয়া হচ্ছে শুনি কিন্তু কেউতো এখনও আমাদের খবর নেয়নি। খেয়ে না খেয়ে আমরা কিভাবে বেঁচে আছি। আমাদেরও করোনার ভয় আছে। কিন্তু পেটের জ্বালায় রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। বেতন না পেলে খেতে না পেয়ে এমনিতেই মরে যাবো তার চেয়ে রাস্তায় মরি সেটাই ভালো।’
বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্রমিক নেতা রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, বর্তমান মহামারীতে গামেন্টর্স শ্রমিকরা মানেবতন জীবনযাপন করছে। তাই তিনি দ্রুত তাদের সকল বকেয়া পাওয়া পরিশোধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, করোনা মহামারীতে যখন সারা দেশ আতংকিত তখন পোশাক কারখানার হাজার হাজার শ্রমিকের বেতন নিয়ে গড়িমসি ও শ্রমিকদের হয়রানী করা হচ্ছে। তিনি এর তীব্র নিন্দা জানান।
শিল্প পুলিশ-১ এর পরিচালক (এসপি) সানা সামিনুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, শ্রমিক বিক্ষোভের খবর পেয়ে পুলিশ রাস্তা থেকে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিয়েছে। এছাড়া যে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে।