আল-আমিন, লালমনিরহাটঃ মোবাইল ফোনে প্রেম, ছলনা করে ব্যাচেলর পরিচয়ে বিয়ে। বিয়ের পর ৭-৮ বছর রংপুরে বসবাস। তুচ্ছ বিষয়ে ঝগড়া হলে রাগ করে চলে যায় প্রতারক, স্বামী নুরুজ্জামান ফিরোজ’। স্বামীর খোজে শিল্পী, (ছদ্মনাম) তার বাড়িতে এসে দেখে পুর্বের আরও একটি বউ আছে। শিল্পীকে বাড়িতে ঢুকতে দেখে তাকে মানুষিক টর্চার সহ নানা হুমকি দিতে থাকে বড় বউ ও তার ভাই। এরপর স্বামীকে ছাড়া কোথাও যাবেন না বলে সেখানে দুদিন ধরে অবস্থান করছেন শিল্পী। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে’’।
ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের পুর্ব বিছনদই এলাকায়। প্রতারক নুরুজ্জামান ফিরোজ (৩৬) ঐ এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে। এছাড়াও রয়েছে তার নামে নানান অভিযোগ।
জানা গেছে মোবাইল ফোনে প্রেমের সুবাদে ছলনা ও ব্যাচেলর পরিচয় দিয়ে ৭-৮ বছর পুর্বে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার, শিল্পী (২৬) নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন হাতীবান্ধা উপজেলার পুর্ব বিছনদই এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে নুরুজ্জামান ফিরোজ।
বিয়ের সময় ২০’লক্ষ টাকা দেন মোহর মুলে তারা প্রথমে কোর্ট এফিডেভিট ও পরে কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ের রেজিষ্টারী সম্পন্ন করেন। বিয়ের পর তারা রংপুরের কোতয়ালী মেট্রো থানার, গ্র্যান্ড হোটেল মোর এলাকায় শাহজাহান সাহেবের বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন।
তুচ্ছ বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হলে গত ২২ জুন সকাল ১০ টার দিকে ফিরোজ তার স্ত্রীকে বিভিন্ন প্রকার প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর শিল্পী বিভিন্ন ভাবে তার সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে সে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে।
স্বামীকে না পেয়ে গতকাল হাতীবান্ধা উপজেলার পুর্ব বিছনদই এলাকায় ফিরোজের বাড়িতে গিয়ে শিল্পী জানতে পারেন তার আগের আরও একটি বউ আছে। এদিকে ফিরোজের বাড়িতে নতুন বউ এসেছে শুনে ফিরোজের বড়স্ত্রীর আত্মীয় স্বজনরা সেখানে গিয়ে শিল্পীকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি এবং মানুষিক টর্চার করে। স্বামীর সংসার ছাড়া কোথাও যাবেনা বলে সেই বাড়িতে অবস্থান করে।
ভুক্তভোগী শিল্পী বলেন, ফিরোজ রংপুরে চাকরি করতো। বিয়ের পর আমরা বাসা ভাড়া নিয়ে ৭-৮ বছর ধরে এক সাথে বসবাস করে আসছি। সেটা ওই এলাকার সবাই জানেন। তার বাড়িতে নিয়ে যাবার জন্য বারবার চাপ দিলে সে আজকাল করতে করতে এতগুলো বছর পার করে দিলো।
আজ তার বাড়িতে এসে দেখি তার নাকি আরও একটি বউ আছে। আমি আমার স্বামীর সংসার করতে চাই। সে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলে আমি আত্মহত্যা করবো। এছাড়া আমার আর কোন উপায় নাই।
তিনি আরও বলেন, এখানে আসার পর আমার স্বামীর বড় স্ত্রীর ভাই, মা এসে আমাকে অনেক হুমকি ধামকি দিয়েছে। রাতে ঘরে লাইট অফ করে আমাকে হত্যা করার প্ল্যান করেছিলো। পরে এলাকা বাসীর প্রতিবাদে তারা আর তা করতে পারেনি।
এবিষয়ে নুরুজ্জামান ফিরোজের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমাকে ব্ল্যাকমেল করে বিয়ে করেছে। আমি কোর্টে মামলা করেছি। লকডাউনে কোর্ট বন্ধ থাকায় হয়তো সে এখনও কাগজ পায়নি। ফলে আমার বাড়িতে এসেছে।
এবিষয়ে ডাউয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম কায়েদ এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, শুনেছি ফিরোজ নাকি সুন্দরগঞ্জ এলাকার একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে আর মেয়েটি বর্তমানে তার বাড়িতে অবস্থান করছেন।
হাতীবান্ধা থানার উপ-পরিদর্শক শাহাজাহান আলী জানান, কিছুদিন আগে ফিরোজ নামে থানায় একটি অভিযোগ দেয়। এরপর থেকে ফিরোজের সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছেনা।
এবিষয়ে হাতীবান্ধা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) এরশাদুল আলম এর মোবাইল ফোনে বারবার কল করলে তা বিজি পাওয়া যায়। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।