নাসির হোসেনের স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে এবার থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেছেন তার সাবেক স্বামী মো. রাকিব হাসান।
আদালতে করা মামলায় তিনি আগের বিয়ে গোপন থাকা অবস্থায় বিয়ে, অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে যাওয়া, ব্যভিচার ও মানহানির অভিযোগ আনেন। তবে এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে মিথ্যাচার, বিষোদগার ছড়ানোর অভিযোগ করে সাবেক স্ত্রী তামিমার বিরুদ্ধে এ মামলার আবেদন করেন রাকিব।
সম্প্রতি তামিমা তাম্মী একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘রাকিব হাসানের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনেক কম’, ‘তাকে মেডিকেলে পাঠানো হোক’ বলে মন্তব্য করেন।
এতে মানহানি হয়েছে উল্লেখ করে রোববার (২১ মার্চ) দিবাগত রাত ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করতে গিয়েছিলেন রাকিব হাসান। পরে ওই মামলার উদ্দেশ্যে লেখা অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পুলিশ।
রাকিবের দেয়া অভিযোগ গ্রহণ করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাকিব হাসান বলেন, ‘গত ১৯ মার্চ বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে একটি অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রচারিত হয়। যেখানে তাম্মি সাক্ষাৎকার দেয়। সাক্ষাৎকারে তাম্মি আমার সম্পর্কে অত্যন্ত আপত্তিকর, ন্যাক্কারজনক ও মানহানিকর মন্তব্য করে। এসব কথা পরবর্তীতে ইউটিউব ও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। যা আমার বিরুদ্ধে মানহানিকর ও আক্রমণাত্মক। তাছাড়া সে আমার ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত দিয়ে কথা বলেছে এবং আমার শিশু কন্যা তুবার পিতা-কন্যার সম্পর্ককে অপমান করে মন্তব্য করেছে। যা আমাকে এবং আমার পরিবারকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করেছে এবং আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি করেছে।’
রাকিব আরও বলেন, ‘আমি তাম্মির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন- ২০১৮ এর ২৫, ২৮ এবং ২৯ ধারার অপরাধের অভিযোগে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করতে আবেদন করেছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছি। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে। সত্যতা মিললে মামলা হিসেবে গ্রহণ এবং তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে, গত ২৪ মার্চ ক্রিকেটার নাসির ও তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী তামিমা তাম্মির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন রাকিব হাসান। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ওই মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের ৮ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তাম্মি পেশায় একজন কেবিন ক্রু। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা রাকিবের নজরে আসে। পরে পত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে সম্পূর্ণ জেনেছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, রাকিবের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক চলমান অবস্থাতেই তাম্মি নাসিরকে বিয়ে করেছেন, যা ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। নাসির তাম্মিকে প্রলুব্ধ করে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, তাম্মি ও নাসিরের এমন অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে রাকিব ও তার ৮ বছর বয়সী শিশু কন্যা মানসিকভাবে মারাত্মক বিপর্যস্ত হয়েছেন। আসামিদের এ ধরনের কার্যকলাপে রাকিবের চরমভাবে মানহানি হয়েছে, যা তার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।