প্রত্যয় নিউজডেস্ক: মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অস্বাভাবিক উত্থান-পতনের কবলে বিশ্বের স্বর্ণের বাজার। এর মধ্যে দেশের বাজারে সর্বোচ্চ পর্যায় ওঠে মূল্যবান এ ধাতুটির দাম। সঙ্গে বেড়েছে স্বর্ণের চাহিদার পরিমাণও। ফলে বাড়তি চাহিদা মেটাতে আমদানিতে ঝুঁকছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।
অবৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি ঠেকাতে নীতিমালা করেছে সরকার। সেই নীতিমালা বাস্তবায়নে দেশে স্বর্ণ আমদানি করতে একটি ব্যাংকসহ ১৯ প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠানকে দুই বছরের জন্য এ লাইসেন্স দেয়া হয়। উল্লেখিত সময়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানি কার্যক্রম সন্তোষজনক হলে পরবর্তীতে লাইসেন্স নবায়ন করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নীতিমালার পর দেশে বৈধ পথে প্রথম স্বর্ণ আমদানি করে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড। গত জুনে প্রতিষ্ঠানটি তাদের গোল্ড ডিলারশিপের অনুকূলে ১১ হাজার গ্রাম পাকা স্বর্ণ আমদানি করে। পরের চালানে অ্যারোসা গোল্ড ক্রোপ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান ১৪ হাজার গ্রাম স্বর্ণ আমদানি করেছে। এছাড়া ছয় প্রতিষ্ঠানের ডিলারশিপের অনুকূলে আরও সাড়ে ৫২ কেজি স্বর্ণ আমদানির আবেদন বিবেচনাধীন রয়েছে।
এর মধ্যে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের আরও ২০ হাজার গ্রাম স্বর্ণ আমদানির আবেদন বিবেচনাধীন, জুয়েলারি হাউজের ২ হাজার ৫০০ গ্রাম, রত্ন গোল্ড কর্নারের তিন হাজার গ্রাম, জড়োয়া হাউজের ১৪ হাজার গ্রাম, রিয়া জুয়েলার্সের ১২ হাজার গ্রাম এবং বিডিইএক্স গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডের ১ হাজার গ্রামসহ সব মিলিয়ে ৫২ কেজি ৫০০ গ্রাম স্বর্ণ আমদানি বিবেচনাধীন রয়েছে।
স্বর্ণের আমদানি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, বাজারে এখন স্বর্ণের প্রচুর চাহিদা। বৈধভাবে আমরাই সবার আগে ১১ কেজি স্বর্ণ আমদানি করেছি। এরপর অ্যারোসা এনেছে ১৪ কেজি। আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের আমদানি আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় আছে। অনুমতি পেলেই আমদানি করবে তারা। বর্তমানে দেশের বাজারের ১৫ থেকে ২০ টন স্বর্ণের চিাহিদা রয়েছে বলে দাবি করেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের এ নেতা।
ব্যাংকিং জটিলতা যদি সহজ না করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে স্বর্ণ আমদানি কঠিন হবে জানিয়ে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, আমরা চাই যেন এই প্রক্রিয়াটা আরও সহজ করা হয়।
স্বর্ণ আমদানির লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- চতুর্থ প্রজন্মের মধুমতি ব্যাংক, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, জুয়েলারি হাউজ, রত্ন গোল্ড কর্নার, অ্যারোসা গোল্ড কর্পোরেশন, আমিন জুয়েলার্স, শ্রীজা গোল্ড প্লেস লিমিটেড, জড়োয়া হাউস প্রাইভেট লিমিটেড, মিলন বাজার, এসকিউ ট্রেডিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, এম কে ইন্টারন্যাশনাল, আমিন জুয়েলার্স লিমিটেড, বুরাক কমোডিটিস এক্সচেঞ্জ কোং, গোল্ডেন ওয়াল্ড জুয়েলার্স, রিয়া জুয়েলার্স, লক্ষ্মী জুয়েলার্স, বিডিইএক্স গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড লিমিটেড, ডি ড্যামাস দ্য আর্ট অব জুয়েলারি এবং প্রিন্সেস গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড কটেজ লিমিটেড।
সর্বশেষ চলতি বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত দাম অনুযায়ী দেশের বাজারে ভালো মানের, অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ৭৪ হাজার ৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৭০ হাজার ৮৫৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬২ হাজার ১১১ টাকায় ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ বিক্রি ৫১ হাজার ৭৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।