প্রত্যয় ডেস্ক, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে কয়েকদিন ধরে মুসলধারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ৫ দিনের ভারী বর্ষণে ঠাকুরগাঁও শহরের বেশকিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শহরের পাশাপাশি গ্রামের মানুষের বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। আমন ধানের বিস্তীর্ণ ক্ষেত পানির নীচে তলিয়ে গেছে।
গত মঙ্গলবার রাত থেকে ঠাকুরগাঁও জেলায় শুরু হয়েছে অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাত। আজকে শনিবার পর্যন্ত টানা বৃষ্টি চলছে।
ইতোমধ্যে শহরের হঠাতবস্তি, মুন্সিপাড়া এলাকায় এবং সদর উপজেলার ঘনিমহেশপুর খালপাড়া এলাকায় মানুষের বাড়ির আঙ্গিনায় পানি উঠেছে।গ্রামে মাটির তৈরী বেশকিছু বাড়িঘর ভেঙ্গে পড়েছে। চুলায় পানি বের হওয়ায় যারা খড়ি দিয়ে রান্নাবান্না করেন তারা রান্না করতে না পেরে শুকনা খাবার খেয়ে জীবন ধারন করছে।
ঘনিমহেশপুর গ্রামের বৃদ্ধ মফিজ উদ্দিন কালাঠু সহ স্থানীয় বয়োবৃদ্ধরা জানান, কয়েকদিনের বৃষ্টি বিগত ১০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এত দীর্ঘসময় পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অতীতে কোনদিন হয়নি।
ভারি বর্ষনে আমন ধানের ক্ষেত পানির নীচে তলিয়ে গেছে। সবজি ক্ষেত নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।আখক্ষেত মাটিতে নুয়ে পড়েছে। জেলার বেশিরভাগ পুকুরের মাছ পুকুর হতে জলাশয়ে বের হয়ে গেছে।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২১৭ দশমিক সাত মিলিমিটার এবং শনিবার সকাল নয়টায় রেকর্ড করা হয়েছে ১১০ দশমিক ৭ মিলিমিটার। ঠাকুরগাঁও শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, টানা বৃষ্টির কারণে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে আজকে আমাদের এই দুরবস্থা।
টানা বৃষ্টিতে সাধারণ মানুষজন ঘর থেকে বের হতে পারছে না। নিম্ন আয়ের মানুষজন কাজে যেতে না পেরে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
জেলা প্রশাসন দুর্গতদের সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে প্রশাসনের দায়িত্বশীলরা বেশকিছু এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক কৃষিবিদ আফতাব হোসেন জানান, বৃষ্টি থেকে গেলে আমনক্ষেত থেকে পানি নেমে গেলে তেমন একটা ক্ষতি হবে না। তবে দীর্ঘস্থায়ী হলে ক্ষতি ঠেকানো সম্ভব নয়।তিনি জানান, ইউনিয়ন উপ সহকারী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার জন্য।রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
রিপোর্টঃ বদরুল ইসলাম বিপ্লব