নিজস্ব প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল (সদর) ইউনিয়নের পূর্ব পংপাচিহা জালধোয়া গ্রামের ইদ্রীস মুন্সির ছেলে কৃষক হাদিস মিয়া (৪৫), যিনি তেল মবিল ছাড়াই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যাতীত নিজের বুদ্ধিমত্তায় আবিস্কার করেছেন ‘অটো ওয়াটার সাপ্লায়ার’।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নিজ বাড়ি সংলগ্ন নরসুন্ধা নদীর পাড়ে নিজের উদ্ভাবিত যন্ত্রের মাধ্যমে খরচ ব্যাতিত বিরামহীন নদী থেকে পানি তুলে নিজ জমিতে সেচ দিয়ে যাচ্ছেন হাদিস মিয়া। নদীর পাড়ে ২২০ লিটারের ১০টি স্টিলের ড্রাম দিয়ে নিজেই তৈরি করেছেন অটো ওয়াটার সাপ্লায়ার। নদী থেকে পানি উঠানোর জন্য ২ইঞ্চি ব্যাসের ৩টি ১৮০ফুট পাইপ ড্রামের সাথে সংযোগ স্থাপনের পর ড্রামে জমা হয় পানি। সেই পানি ড্রামের নীচ দিয়ে চারইঞ্চি ব্যাসের একটি পাইপ দিয়ে জমিতে চলে যায়।
দিনরাত চবিশ ঘন্টাই অনবরত শব্দহীন তেল মবিল ও কোনও খরচ ছাড়াই নদী থেকে পানি উঠছে ড্রামে এবং তা সরবরাহ হচ্ছে নিজের কৃষি জমিতে ও পুকুরে। আশেপাশের গ্রাম থেকে উৎসুক জনসাধারন ও স্থানীয় কৃষক প্রতিদিনই দেখতে ভীড় করছেন হাদিস মিয়ার অটো ওয়াটার সাপ্লাই।
হাদিস মিয়া নিজের এই আবিস্কারের বিষয়ে জানান, প্রথম বছর ছোট ছোট প্লাস্টিকের ড্রাম দিয়ে মানব দেহে স্যালাইন পুশ করার পাইপ দিয়ে শুরু করি এই প্রক্রিয়া। ভালো কাজ করছে দেখে হাফ ইঞ্চি পাইপ দিয়ে নিজের চেষ্টা অব্যাহত রাখি এতে সফলতাও পাই। পরের বছর ১ইঞ্চি পাইপ তারপর ২ইঞ্চি, ৩ইঞ্চি পরিশেষে ৪ইঞ্চি পাইপে অনবরত পানি সরবরাহ করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। নিজের ছয় একর জমিতে এবং পুকুরে প্রায় ৪০০ফুট দূরে সারা বছর খরচ ছাড়াই সেচ কাজ চালাচ্ছি। এতে প্রায় ১ লাখ টাকার খরচ হয়েছে।
হাদিস মিয়া আরোও জানান, পেশায় তিনি বাস, ট্রাকের ইঞ্জিন মিস্ত্রি। ২০বছর যাবত তিনি ওই কাজেই দক্ষতা রেখেছেন।বাতাসকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে নতুন কিছু আবিস্কার করা যায় এটাই ছিল হাসিস মিয়ার নেশা। নিজের মেধা ও ইচ্ছাশক্তি কাজে লাগিয়ে সফলতাও পান। নিজের তৈরি অটো ওয়াটার সাপ্লাই চালু ও বন্ধ করার সুইচও আছে।
তিনি আশঅবাদ ব্যক্ত করে জানান, সরকারি সাহায্য সহযোগিতা পেলে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারব। একবার স্থাপন করার পর কোনও খরচ ছাড়াই সারা বছর সেচ দেয়া যাবে জমিতে।