ওয়েব ডেস্ক: গত শুক্রবার ফেরির ধাক্কায় পদ্মা সেতুর তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। শুধু সংশ্লিষ্ট পিলারের ক্যাপের একটি অংশ কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। দেশের অন্যতম শক্তিশালী এই সেতু রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয়। নৌযানের আঘাতেও পদ্মা সেতুর অবকাঠামোর মৌলিক ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের বলেন, শুক্রবার ফেরির ধাক্কায় পদ্মা সেতুর কোনো ক্ষতি হয়নি। যা হয়েছে তা সামান্য মেরামত করলেই হয়ে যাবে।
জানা গেছে, গত ২০০ বছরে এই নৌপথ দিয়ে যত ধরনের নৌযান চলাচল করেছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের সব নৌযান চলাচলের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সেতুর নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। শুক্রবার সেতুর ১৭ নম্বর পিলারে রো রো ফেরি শাহজালালের ধাক্কা লাগে। এই ফেরিটি বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে চলাচল করছিল। এ রুটের ফেরিগুলো সেতুর বিভিন্ন পিলারের মধ্য দিয়ে চলাচল করে। নদীর পানি থেকে কিছুটা ওপর পর্যন্ত পিলারের চারপাশে ৫০ ফুটের মতো জায়গায় পিলারে পাইল ক্যাপ রয়েছে। ফেরিটি ধাক্কা দেওয়ায় এই পাইল ক্যাপ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাতে মূল পিলারের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।
তারা জানিয়েছেন, পদ্মা নদী দিয়ে সর্বোচ্চ চার হাজার টন সক্ষমতার নৌযান চলাচল করবে। বিষয়টি ধরে নিয়ে সেই সক্ষমতা বজায় রেখে পদ্মা সেতুর অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। চার হাজার টনের নৌযানের আঘাতেও সেতু অবকাঠামোর মৌলিক কোনো ক্ষতি হবে না।
জানা গেছে, পদ্মা নদীতে চলাচলকারী ফেরিগুলো এক হাজার টন বা তার চেয়ে একটু বেশি ওজনের। পিলারে ফেরির ধাক্কা লাগার ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেতু বিভাগ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে আশু করণীয় নির্ধারণ করেছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেছেন, এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত কাজ শেষ করা হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল পৌনে ১০টার দিকে বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসার পথে পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয় ফেরি শাহ্ জালাল। ফেরিতে তখন ৩৮টি যানবাহন ও শতাধিক যাত্রী ছিল। এতে আহত হন ফেরির প্রায় ২০ যাত্রী। এ ঘটনায় ফেরির মাস্টার মো. আবদুর রহমানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।