শেখ সাখাওয়াত হোসেন,পাবনা (জেলা) প্রতিনিধি:
শুরু হয়েছে বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। পাঁচ দিনের এ আনন্দ আয়োজনের সকল প্রস্তুতি নিয়ে শুরু হয়েছে পূজা। ভক্তদের ভালোবাসায়, দেবী দুর্গা সেজে উঠেছেন আপন মহিমায়। আজ, শনিবার (১ অক্টোবর) থেকে পাঁচ দিনের দুর্গোৎসবে মেতেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। মনের মাঝে আশা দুর্গা তাদের জন্য নিয়ে আসবেন অনাবিল শান্তি।
শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ১৯টি পুজা মন্ডপে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় সবগুলি মন্ডপে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। পূজা মন্ডপের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় বসানো সিসি ক্যামেরা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনাইন রাসেল।
শনিবার (১অক্টোবর) সকালে ভাঙ্গুড়া থানায় ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ্যে সুইচ টিপে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন গোলাম হাসনাইন রাসেল।
জানা গেছে, সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজায় নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে উপজেলার ১৯টি পূজা মন্ডপে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনেন পৌরসভার মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল।
উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার অর্ন্তগত ১৯টি পূজা মন্ডপে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ, আনসার ও ভিডিপির ১১৪ জন সদস্য-সদস্যা, প্রতিটি মন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটি, ভ্রাম্যমান পুলিশ টিম,
ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনাইন রাসেলের নির্দেশে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুল হাসান বিপ্লবের নেতৃত্বে পৌরসভার ৬টি পূজামন্ডপে মোটরসাইকেল নিয়ে নিরাপত্তা বেস্টনি তৈরি করে কাজ করছে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছয়টি গ্রুপে ভাগ হয়ে বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন দুর্গাপূজার মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে উপজেলা ছাত্রলীগের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।
ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের তত্ত্বাবধায়নে সিসি ক্যামেরাগুলি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সনাতন ধর্মালম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে কেউ যেন কোন ধরণের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে সে জন্য জন্য ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনাইন রাসেল এই ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ব্যবস্থা করেছেন। পূজা মন্ডপে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপনে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়েছেন ভাঙ্গুড়ার এসকে এসবি ক্যাবল নেটওয়ার্ক। শারদীয় দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী তথা পূজার শেষ দিন পর্যন্ত এই সিসি ক্যামেরাগুলির নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করবে ভাঙ্গুড়া থানার দায়িত্বে থাকা কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার বৃন্দ।
এসময় ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী সংগীত কুমার পাল, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুল হাসান বিপ্লব, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি প্রভাষক হেলাল উদ্দীন খান, এসকে এসবি ক্যাবেল নেটওয়ার্কের ইন্জিনিয়ারসহ উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির বিভিন্ন সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনাইন রাসেল বলেন, সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজায় নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে উপজেলার ১৯টি পূজামন্ডপে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। সম্প্রীতির এই ভাঙ্গুড়াতে শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কোনো অসাম্প্রদায়িক অপশক্তি যেন সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে তার জন্য থানা পুলিশের পাশাপাশি যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
গোলাম হাসনাইন রাসেল আরো বলেন, ‘১৯৭১ সালে রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে এই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। সেই রক্তধারায় সব ধর্মের মানুষের রক্ত মিশে আছে। বাংলাদেশের মানুষ শান্তি প্রিয়। মাঝে মাঝে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি বাংলাদেশের সম্প্রীতিকে নষ্ট করতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তারা বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ঘিরে চক্রান্ত করে, বিরোধ ছড়াতে চায়। কোনো অপশক্তির ঠাঁই মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে হবে না। আমরা সবাই মিলে একযোগে ধর্মীয় উৎসবে সামিল হবো।’
ভাঙ্গুড়া উপজেলা আনসার ও ভিডিপি অফিসার মমতাজ মহল জানান, উপজেলার ১৯টি পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তায় ৭৬ জন পুরুষ, ৩৮জন মহিলাসহ সর্বমোট ১১৪ জন আনসার ও ভিডিপির সদস্য-সদস্যা দায়িত্ব পালন করছেন। অধিক গুরুত্বপূর্ণ পূজা মন্ডপে-৮জন, গুরুত্বপূর্ণ পূজা মন্ডপে-৬জন এবং সাধারণ পূজা মণ্ডপে-৪জন করে ডিউটি পালন করছে।
মমতাজ মহল আরো বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পাবনা জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ মুজিবুল হক স্যারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য দপ্তরের সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, পূজা মন্ডপ গুলিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, আনসার ও ভিডিপির সদস্য-সদস্যা, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যসহ টহল পুলিশের পাশাপাশি থানা থেকে সার্বক্ষণিক ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাগুলো পর্যাবেক্ষণ করা হবে।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন ‘এ বছর ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ১৯টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে ভাঙ্গুড়ায় পূজা উৎসব পালনে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।’