গাজী মো. তাহেরুল আলম: ভোলা জেলার ৭ উপজেলায় ৫২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৭টি বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর বাস্তবায়নে বিশ্ব ব্যাংক’র অর্থায়নে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোর ৭২ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে শতভাগ কাজ শেষ হওয়ায় ২৪টি সাইক্লোন সেল্টার হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বছরের নভেম্বরের মধ্যে শেষ করা হবে আরো ১৮টির কাজ। বাকিগুলোর কাজ আগামী বছরের মার্চের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
‘বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয় প্রকল্প’র মাধ্যমে ২০২০ সালের মার্চ মাসে ১০ হাজার ৫০০ স্কয়ার ফিট জমির উপর তিন তলা বিশিষ্ট প্রতিটি স্কুল কাম সাইক্লোন সেল্টার এর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ১০ তলা ফাউন্ডেশনের এসব আশ্রয় কেন্দ্রে পরবর্তীতে আরো সম্প্রসারণ করা যাবে। দুর্যোগকালীন সময়ে প্রতিটি কেন্দ্রে ২তলায় গবাদি পশু ও তৃতীয় তলায় মানুষ থাকতে পারবে। এছাড়া অন্য সময় বিদ্যালয়ের কার্যক্রম থাকবে।
অত্যাধুনিক এসব সাইক্লোন সেল্টারে রয়েছে অসুস্থ রোগী ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। প্রতিটি সাইক্লোন সেল্টারে দুর্যোগকালীন সময়ে ২ হাজার মানুষ অবস্থান নিতে পারবে। এতে করে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় দুই লাখ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে। একইসাথে শিক্ষার মান উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে নতুন এসব বিদ্যালয় ভবন।
প্রকল্পের সহকারী পরিচালক সুব্রত মজুমদার বলেন, এসব বিদ্যালয় কাম আশ্রয় কেন্দ্রে র্যামের মাধ্যমে ২ তলায় অসুস্থ বা বয়স্ক মানুষকে তোলা যাবে। রয়েছে সোলারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের ব্যবস্থা। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিতকরাসহ সব ধরনের আধুনিক সুবিধা রয়েছে এখানে।
নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এলজিইডি’র কর্মকর্তারা জানান, মোট ৯৭টি সাইক্লোন সেল্টারের মধ্যে ভোলা সদরে হচ্ছে ১৭টি। দৌলতখানে ৯টি। বোরহানউদ্দিনে ১০ টি। লালমোহনে ২২টি। তজুমদ্দিনে ১০টি। চরফ্যাসনে ২৩টি ও মনপুরায় ৬টি রয়েছে।
জেলা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলীল জানান, ভোলা দ্বীপ জেলা হওয়াতে এখানে সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচ তলাটি ফাকা থাকার ফলে দুর্যোগকালীন সময়ে সহজেই পানি সরে যাবে এবং অন্য সময়ে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান করা যাবে নিচের তলায়।
তিনি জানান, কাজের শতভাগ গুণগত মান বজায় রাখার জন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া একই প্রকল্পের আওতায় ২৪০ কোটি টাকায় ৪২টি সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এগুলো চালু হলে দুর্যোগ মোকাবেলায় এ অঞ্চলের মানুষের সক্ষমতা বাড়বে।