২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি স্থাপনা নির্মাণে শতভাগ ব্লক ব্যবহার করা হবে। ফলে অবৈধ ইটভাটাগুলো এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে জাতীয় পরিবেশ কমিটির নির্বাহী কমিটির ১৫তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পোড়া ইটের বদলে ব্লক ব্যবহারে উৎসাহিত করতে জাতীয় সংসদে বিল উত্থাপন করা হয়। ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) বিল-২০১৩’ সংশোধনের জন্য সংসদে একটি বিল উত্থাপন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। সংসদে সেই বিল পাস হওয়ার পর একই বছরের ২৪ নভেম্বর মন্ত্রণালয় থেকে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) এর ধারা ৫(৩ক) এ দেয়া ক্ষমতাবলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মাটির ব্যবহার পর্যায়ক্রমে কমানোর উদ্দেশ্যে সব সরকারি নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে ভবনের দেয়াল ও সীমানা প্রাচির, হেরিং বোন বন্ড রাস্তা এবং গ্রাম সড়ক টাইপ-বি’র ক্ষেত্রে ইটের বিকল্প হিসেবে ২০২৫ সালের মধ্যে ব্লক ব্যবহার বাধ্যতামূলক।
এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা নতুন যে আইন করেছি সে আইন অনুযায়ী ইটের পরিবর্তে ব্লক ব্যবহার করা হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে শতভাগ সরকারি স্থাপনা ব্লক ইট দ্বারা নির্মাণ হবে। এতে অবৈধ ইটাভাটাগুলো এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযান চলমান রয়েছে।
এখনো সরকারি স্থাপনায় ইট ব্যবহার হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ২০২৫ সালের মধ্যে শতভাগ ব্লক ব্যবহারে আপনারা কতটা সফল হবেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শাহাব উদ্দিন বলেন, আমরা শতভাগ আশাবাদী। ২০২৫ সালের মধ্যে শতভাগ সরকারি স্থাপনায় ব্লক ব্যবহার করা হবে। ইটের পরিবর্তে ব্লক দিয়ে বাড়ি তৈরিতে প্রায় ৩০ শতাংশ খরচ কমানো সম্ভব। বাড়ির স্থায়িত্ব বেশি হয়, দেখতেও সুন্দর। এ ছাড়া ব্লকে তৈরি বাড়ি গ্রীষ্মকালে ঠান্ডা এবং শীতকালে গরম থাকে। পরিবেশের কোনো ক্ষতিও হয় না ব্লক তৈরিতে।
বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশে ব্লক তৈরি করছে ৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান সিএসইবি, সিএসইবি ইন্টার লকিং, স্যান্ড সিমেন্ট হলো ব্লক, থার্মার ব্লক, স্যান্ডউইচ প্যানেল ও ফেরোসিমেন্ট চ্যানেলের মতো আধুনিক ব্লক তৈরি করছে।
সভাশেষে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার বলেন, ব্লক ইট জমি থেকে মাটি নিয়ে নয়, ড্রেজিংয়ের মাটি নিয়ে তৈরি হচ্ছে। আমরা ধাপে ধাপে এগুলো সরকারি স্থাপনায় ব্যবহার শুরু করেছি। বর্তমানে সরকারি স্থাপনায় ৩০ ভাগ ব্লক ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০২৫ সালের আগেই আমরা শতভাগে চলে যাব।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার উপস্থিত ছিলেন।