ওয়েব ডেস্ক: চট্টগ্রামে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে পুলিশের দেওয়া প্রটোকল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রটোকলে একসঙ্গে পুলিশের দুই ওসির উপস্থিতি নিয়ে হচ্ছে নানা আলোচনা।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাজির দেউড়ি এলাকায় বিভাগীয় সমাবেশ ও শোভাযাত্রার আয়োজন করে চট্টগ্রাম বিএনপি।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ। এসময় তাকে প্রটোকল দিয়ে আলোচনায় আসেন ওই দুই ওসি। তারা হলেন– কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের চৌধুরী এবং চকবাজার থানার ওসি জাহেদুল কবির। তাদের বাড়ি সালাহউদ্দিন আহমেদের নির্বাচনী এলাকা কক্সবাজার জেলায়।
৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পুলিশের দলীয় লেজুড়বৃত্তি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়। এ অবস্থায় দুই ওসির এমন কাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশ শুরু হয়। বিকেল ৪টার কিছু আগে সমাবেশস্থলে আসেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি নেতারা তাকে ঘিরে ধরেন। এসময় দুই ওসি নেতাকর্মীদের ভিড় ঠেলে বিএনপি নেতার কাছাকাছি যান। সমাবেশস্থলে থাকা অন্য পুলিশ সদস্যরা দুই ওসির নেতৃত্বে তাকে ঘিরে ধরে মঞ্চে তুলে দেন। এসময় মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে দুই ওসিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড় সামলাতেও দেখা যায়। এসময় মঞ্চে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদীন ফারুক ও গোলাম আকবর খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন সমাবেশস্থলে আসার আগে পুলিশের তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি। সমাবেশ শেষে শোভাযাত্রা বের করে বিএনপি। এসময় ওসি জাহেদুল কবির চলে যান। ওসি ফজলুল কাদের চৌধুরী বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনকে বহনকারী ট্রাকে করে লালদিঘীর পাড় পর্যন্ত যান। সেখানে শোভাযাত্রা শেষ হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, সালাহউদ্দিনকে প্রটোকল দেওয়ার কোনো অফিসিয়াল নির্দেশনা ছিল না। তবে সমাবেশস্থলের আশেপাশে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে দুই ওসিকে কল করে পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে সিএমপির উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ লিয়াকত আলী বলেন, প্রটোকলের বিষয়টা আমি জানি না। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোতোয়ালী থানার ওসি সেখানে ছিলেন। দলীয় দ্বন্দ্বের কারণে সেখানে ঝামেলা হতে পারে এমন তথ্য ছিল। সমাবেশ শেষে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতিও হয়। পুলিশের উপস্থিতির কারণে বড় কিছু হয়নি।
তবে বিএনপির কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে এসেছিলেন। তিনি এমন প্রটোকল পাননি। এটি তো তার নিজের এলাকা।
আর আগে গত ২৮ আগস্ট বিতর্কিত শিল্প গ্রুপ এস আলমের মালিকানাধীন গাড়িতে চড়ে সংবর্ধনা নিয়ে সমালোচনায় পড়েন সালাহউদ্দিন আহমেদ। যদিও এটিকে ‘অসাবধানতা ও অনিচ্ছাকৃত’ উল্লেখ করে দেশবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা।