প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক: করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কায় বেসামাল ইউরোপীয় অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চারের জন্য ৭৫০ বিলিয়ন (৭৫ হাজার কোটি) ইউরোর এক বিশাল চুক্তি করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। করোনা পরবর্তী সময়ে নিজেদের অর্থনীতি যাতে মুখ থুবড়ে না পড়ে, সেই উদ্দেশ্যে ব্রাসেলসে দীর্ঘ পাঁচদিন ধরে ম্যারাথন বৈঠকের পর এই চুক্তিতে পৌঁছাতে সমর্থ হন ইইউভুক্ত দেশগুলোর শীর্ষ নেতারা।
ইউরোপের ২৭টি দেশ ঋণ হিসেবে এ ৭৫০ বিলিয়ন ইউরো অর্থ ব্যবহার করবে বলে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো পাবে ৩৯০ বিলিয়ন ইউরো। এই তালিকায় এগিয়ে আছে ইতালি ও স্পেন। কারণ করোনায় ইউরোপের এই দুই দেশই সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
কম সুদে আরও ৩৬০ বিলিয়ন ইউরো দেওয়া হবে অন্যান্য দেশকে। শুক্রবার সকালে ব্রাসেলসে বৈঠক শুরু করেন ইউরোপের নেতারা। এ বিষয়ে প্রায় ৯০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠক চলে। ২০০০ সালের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতাদের এটাই সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের বৈঠক, যেটি প্রায় পাঁচদিন ধরে হয়েছে।
এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সবগুলো অঙ্গরাজ্যেই করোনা হানা দিয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ব্রাজিল, ভারত এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ করোনার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইউরোপে করোনায় সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হয়েছে স্পেন ও ইতালিতে। এছাড়া যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্সেও করোনার কারণে মারাত্মক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। করোনার প্রভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে ধস নেমেছে। ইউরোপের অর্থনীতিতেও এর রেশ পড়েছে। সে কারণেই দেশগুলো একত্র হয়ে এই সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। ইউরোপের ২৭টি দেশের শীর্ষ নেতা, ইউরোপীয় পরিষদ ও ইউরোপীয় কমিশনের কর্মকর্তারা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর এই প্রথম ইইউ নেতারা সশরীরে উপস্থিত হয়ে বৈঠক করলেন।
চুক্তি সম্পাদনের পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোন এক টুইটে লেখেন, ‘এটা একটা ঐতিহাসিক দিন।’ বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী টুইট করেন, ‘এ রকম চুক্তি ইইউ আগে কখনো করেনি।’ ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ফন ডার লেইন টুইট করেন, ‘আজ আমরা একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা সবাই গর্ব করতে পারি। তবে আমাদের জন্য অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ রয়ে গেছে। সবার আগে এতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুমোদন পেতে হবে।’