1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

ব্রেক্সিট : ইইউ-ব্রিটিশ নাগরিকদের ভাগ্য কি বদলাবে?

  • Update Time : শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৩৩০ Time View

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বিশ্বের সবচেয়ে বড় একটি সম্প্রীতির জোটের নাম। বলাই বাহুল্য জোটে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশগুলোর অবস্থান। এই জোটের অন্যতম সামরিক এবং অর্থনৈতিক শক্তিধর একটি দেশ যুক্তরাজ্য। তারা ২০১৬ সালে জনগণের রায় নিয়ে এই জোট থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

১৯৫৭ সালে ইউরোপিয়ান অর্থনৈতিক কমিউনিটি (ইইসি) হিসেবে গঠিত হওয়া এই জোট ১৯৯৩ সালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে, তবে যুক্তরাজ্যে এই জোটের অবস্থান শুরু থেকে নয়, গত ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি যুক্তরাজ্য এই জোটের অন্তর্ভুক্ত হয়। অথচ যোগদানের দু’বছর পরেই ইইসিতে থাকা না থাকা নিয়ে ১৯৭৫ সালে একটি রেফারেন্ডাম হয় তাতে অবশ্য ৬৭ শতাংশ মানুষ ইইসি-এর পক্ষে থাকার অবস্থান নেয়।

২০১৬ সালের জনগণের রায়ে যুক্তরাজ্য ২০২০ সালের ৩১ শে জানুয়ারি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ত্যাগ করে অতঃপর বিভিন্ন চুক্তির জন্য ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ট্রানজেশন পিরিয়ড হিসেবে নির্ধারণ করা হয় এবং এই সময় একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আপ্রাণ চেষ্টা করা হয় কিন্তু উভয় পক্ষের স্বার্থ রক্ষার জন্য অনেক দর-কষাকষির পর বড় ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় এবং একেবারে কিনারায় এসে ২৪ ডিসেম্বর ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য অতি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছায়।

বাণিজ্য চুক্তি যাই হোক না কেন যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের জনগণের জীবনে আগামী ১ জানুয়ারি ২০২১ সাল থেকে ডেকে নিয়ে আসছে একটি নতুন পরিস্থিতি, যা গত ৪৭ বছরে স্বাভাবিক জীবনের মতো অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে, বলতে গেলে দুইটি প্রজন্ম নিজ দেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্য বা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে আলাদাভাবে চিন্তা করতে পারেনি। চাকরি, ব্যবসা, ভ্রমণ, উচ্চশিক্ষা, ঐতিহ্য সবকিছুতে আলাদা করার কোনো বিষয় ছিল না কিন্তু এখন এক অভিনব সমস্যার মধ্যে দাঁড় করিয়ে দেবে।

যেমন উভয় অঞ্চলের জনগণের অবাধ চলাচল আর আগের মতো থাকছে না, চাকরির ক্ষেত্রেও থাকছে শর্ত, বাণিজ্যে ট্যারিফ না থাকলেও একই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখন আলাদাভাবে পরিচালিত করতে হবে, শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা আগের মতো থাকছে না, স্বাস্থ্যসেবার সুবিধাও আলাদা হতে চলেছে। মোটকথা দুটি ভিন্ন রাষ্ট্রের মতো সবকিছুই পরিচালিত হবে।

ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভিসার জটিলতা না থাকলে থামতে হবে ইমিগ্রেশনে, পাচ্ছেন না স্বাস্থ্য বীমা, ফিরতে হবে ৩-৬ মাস (ইউকে/ইইউ), থাকতে হবে পাসপোর্ট এমনকি পোষ্য প্রাণীর জন্য আলাদা পাসপোর্ট নিতে হবে এতেই ক্ষান্ত নয় পোষ্য প্রাণীর স্বাস্থ্যগত সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। সেইসাথে ভ্রমণকালে পণ্য পরিবহনের থাকছে বিভিন্ন বিধি-নিষেধ।

বাণিজ্য ক্ষেত্রে বন্দরে প্রতিবন্ধকতা অর্থাৎ চেকিং বা ভেরিফিকেশন প্রসেস বাড়বে আমলাতান্ত্রিকতা, দু’পক্ষের ইমিগ্রেশনে থাকবে বিভিন্ন চেক পয়েন্টের ব্যবস্থা, বাড়বে আমদানি/রফতানি ব্যয়, অথচ যুক্তরাজ্য তাদের আমদানির ৫২ শতাংশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এবং মোট রফতানির ৪৩ শতাংশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে।

অতীব গুরুত্বপূর্ণ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা আটকে ছিল, সাড়ে পাঁচ বছরের জন্য উভয় দেশের জলসীমা ৭৫ শতাংশ মুক্ত থাকবে তাতে উভয় দেশের জেলেরা মাছ শিকার করতে পারবে। যদিও এই শিল্পের যুক্তরাজ্যের জেলেরা যে পরিমাণ মাছ শিকার করে তা পুরোটাই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাজারে রফতানি করা হয়, অর্থের অংকে যা প্রায় বাৎসরিক ৬ হাজার ৭শত ১৮ কোটি টাকার সমতূল্য।

অথচ এই মৎস্য শিকারে একটি প্রজন্ম তৈরি হয়েছে যারা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং তাদের স্বপ্ন এখানেই। আগামী সাড়ে পাঁচ বছর পরে তাদের ভবিষ্যৎ কি হবে এখনো দ্বিধান্বিত।

শিক্ষার্থী এবং চাকরিজীবীরা সম্মুখীন হবেন আরেক জটিলতায়। কেননা সার্টিফিকেট বা প্রফেশনাল সার্টিফিকেট-এর মানদণ্ড পুনঃনির্ধারিত হবে। বাধাগ্রস্ত হবে উচ্চশিক্ষা ইউরোপের শিক্ষার্থীরা এবং একইভাবে যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আর্থিক-সুবিধা এবং সেইসাথে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকালে স্বাস্থ্য-সুবিধাসহ যে বিষয়গুলো আছে তাতে অনেক জটিলতার সম্মুখীন হবে।

সামগ্রিক দেশের উন্নয়নের জন্য, মানুষের উন্নয়নের জন্য পরিবর্তন প্রয়োজন হয় তবে এই পরিবর্তন কতটা খাপ খাইয়ে নিতে পারবে পুরো বিষয়গুলো দেখলে আমরা কিছুটা আন্দাজ করতে পারি, এর বাইরে আরও অনেক বিষয় আছে যায় ছোট পরিসরে আলোচনা করা সম্ভব নয় শুধুমাত্র বাস্তব জীবনের কিছু বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হলো।

যদিও যুক্তরাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়নি ছেড়ে দেয়া হয়েছিল দেশের জনগণের ওপর, ইইউ বিরোধীপক্ষ জনগণকে মাইগ্রেশনের রূপরেখা উপস্থাপন করে অর্থাৎ (৩৭ লাখ ইউরোপিয়ান নাগরিক যুক্তরাজ্যে বসবাস করে তার বিপরীতে মাত্র ১৩ লাখ যুক্তরাজ্যের নাগরিক ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বসবাস)।

রাষ্ট্রীয় স্বকীয়তা এবং ঐতিহ্য রক্ষার তাগিদ দিয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন কিন্তু ভোট প্রদানের পরে লাখ লাখ যুক্তরাজ্যের নাগরিক বিভিন্নভাবে জানতে চেয়েছিলেন ব্রেক্সিট তাদের জন্য কি ক্ষতির কারণ হতে পারে তবে এর পূর্বেই রায় হয়ে গিয়েছিল। যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত বিশ্বের নাগরিকেরা রাজনীতিবিদদের উপস্থাপিত পরিকল্পনায় নিজেদের রায় প্রদান করেছিলেন যাতে নিজের ভাবনাটা কমই উপস্থাপিত হয়েছে।

শুরুতে যেমনটা বলেছিলাম ১৯৭৩ সালে যুক্তরাজ্য ইইসিতে যোগদানের মাধ্যমে বর্তমান ইউরোপিয়ান কমিশনের সদস্য লাভ করে তবে ১৯৫৭ সালে গঠিত ইইসিতে যুক্তরাজ্যের যোগদান অতটা সহজ ছিল না কেননা যুক্তরাজ্য ১৯৬১ সালে যোগদান করতে চাইলেও ফ্রান্স সরকারের ভেটো দেয়ার কারণে যোগদান করা সম্ভব হয়নি।

১৯৬৩ সালের আরেকটি প্রচেষ্টাও ফ্রান্স সরকারের ভেটোর মাধ্যমে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে ১৯৬৭ সালে তৃতীয়বারের মতো যুক্তরাজ্য আবার ইচ্ছা পোষণ করলে ১৯৬৯ ইইসি-এর পক্ষ থেকে অনুমতি পাওয়া যায় এবং ১৯৭০ সালে আলোচনা শুরুর মাধ্যমে ১ জানুয়ারির ১৯৭৩ সালে সদস্যপদ লাভ করে।

ঠিক সদস্য পদ পাওয়ার মতো সদস্য পদ ছেড়ে যাওয়াটা কঠিন ছিল যুক্তরাজ্যের জন্য। নিজেদের পার্লামেন্টের অচলাবস্থা এবং দু’জন প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় নিতে হয়েছিল এই ব্রেক্সিট-এর জন্য। দু’জন শক্তিশালী রাজনীতিবিদদের ক্যারিয়ার থেমে গিয়েছিল। তবে শেষ অবধি ট্রানজেশন পিরিয়ড মাত্র ৪ কর্মদিবস বাকি থাকতে বড়দিনের সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে একটি সমঝোতায় আসতে পেরেছে তবে এই সমঝোতা উভয় দেশের নাগরিকদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কতটা কার্যকর হবে তা দেখার এখনো অনেক বাকি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..