সূর্যাস্তের মধ্য দিয়ে অনন্তকালের পথে যাত্রা শুরু করেছে বিদায়ী বছর ২০২০। সব দুঃখ-বেদনা ভুলে সারাবিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশও বরণ করেছে নতুন বছরকে। স্বাগতম ২০২১। নতুন বছরের প্রারম্ভে প্রত্যাশ্য মহামারি করোনা থেকে মুক্তি। পশ্চাৎমুখিতার দীপ নিভে যাবে। জাতীয় জীবনে আসবে সাম্য ও সমৃদ্ধি।
২০২০ ছিল মহামারি, যুদ্ধ-বিগ্রহ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের বছর। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ২০২০ সালে এসে একসঙ্গে অনেকগুলো মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।প্রাণঘাতী করোনা কেড়ে নিয়েছে রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ দেশের হাজারো মানুষের প্রাণ। ঘটনাবহুল বছরটি মানুষের জীবনাচারে এনেছে আমূল পরিবর্তন। শুধু বাংলাদেশ নয়, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে ব্যস্ত ছিল পুরো বিশ্ব।
করোনা মোকাবিলায় জনসচেতনতা সৃষ্টি, দীর্ঘ সময়ের জন্য সরকারি ছুটি, ব্যবসায়ীদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা প্রশংসা পায়। অন্যদিকে টেস্টে অনিয়ম,করোনা সামগ্রী ক্রয়ে অনিয়ম ও সরকারি সিদ্ধান্তহীনতার সমালোচনা হয় দেশজুড়ে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, শেষ স্প্যান বসানোর মাধ্যমে স্বপ্নের পদ্মা সেতুকে দৃশ্যমান করা, ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা দিয়ে রায়, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ জারি, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানো, যুবা ক্রিকেট দলের আইসিসির অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয় বিদায়ী বছরের বড় প্রাপ্তি।
চীনের উহান থেকে ছড়ানো মহামারি,লেবাননের ভয়াবহ বিস্ফোরণ, কৃষাঙ্গ হত্যাকাণ্ডের জেরে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ, জলঘোলা করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয়, ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাশেম সোলেইমানি হত্যা, বিভিন্ন আরব দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপনসহ নানা ঘটনার সাক্ষী ২০২০।
মহামারিতে পুরো বিশ্ব যখন টালমাটাল তখন করোনা টিকার উদ্ভাবনের খবর দেয় রাশিয়া। এরপর ৯ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ফাইজার ও জার্মানির বায়োএনটেক যৌথভাবে করোনা টিকা উদ্ভাবনের কথা জানায়। আমেরিকা, ইউরোপসহ অনেক দেশেই নাগরিকরা নিতে শুরু করেছেন করোনার ভ্যাকসিন।
করোনা ভ্যাকসিনে নজর আছে বাংলাদেশেরও। যুক্তরাষ্ট্রে উদ্ভাবিত অক্সফোর্ডের টিকা জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের আগেই বাংলাদেশে চলে আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। করোনাসহ সব বাধা অতিক্রম করে ২০২১ সালে পৃথিবী নতুন প্রাণ পাবে এ প্রত্যাশা সবার।