ওয়েব ডেস্ক: জমির দলিল রেজিস্ট্রি করতে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অতিরিক্ত টাকা দেননি এমন মানুষের খুবই কম। দলিল লেখক কিংবা দালালরা নানা অজুহাতে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে এই অতিরিক্ত অর্থ।
তবে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নাম বলে দলিল প্রতি এক থেকে দুই হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিনব অভিযোগ নতুন। এমন অভিযোগ উঠেছে আশুলিয়ার সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখক সমিতির নেতাদের বিরুদ্ধে।
ছদ্মবেশে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম ভুক্তভোগী ও দলিল লেখকদের সঙ্গে আলাপ করে এই অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে। সোমবার (১ নভেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর সহকারী পরিচালক রেজাউল করিমের নেতৃত্বে এনফোর্সমেন্ট টিম ওই অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) শফি উল্লাহ বলেন, আশুলিয়ার সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রি বাবদ সরকারের নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত ঘুষ দাবির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে এনফোর্সমেন্ট টিম। দুদক টিম সেবাপ্রার্থীর ছদ্মবেশে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ গ্রহণ হয় কিনা তা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে। অভিযানকালে দলিল লেখক সমিতি ও সাব-রেজিস্ট্রার পারস্পরিক যোগসাজশে রেজিস্ট্রি বাবদ সরকারের নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযোগের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রারের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রাহক সেবা নিশ্চিতের জন্য দৃশ্যমান স্থানে পূর্ণাঙ্গ সিটিজেন চার্টার স্থাপনের অনুরোধ করে দুদক টিম। অভিযানে প্রাপ্ত নথিপত্র যাচাই করে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
আশুলিয়া সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে প্রচুর জাল দলিল হয়। ইতোমধ্যে প্রায় শতাধিক বিঘা সরকারের খাস জমি হস্তান্তরের দলিল রেজিস্ট্রার হয়েছে। ফলে সরকারের কয়েক শত কোটি টাকার সম্পত্তি হাতছাড়া হয়েছে। এক শ্রেণির দলিল লেখক ও সাব-রেজিষ্ট্রার দুই হাতে অর্থ কামাচ্ছে এমন অভিযোগে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আশুলিয়া সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মো. নূরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন আশুলিয়া সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসের সমিতিভুক্ত দলিল লেখকদের কাছ থেকে দুদকের নাম করে দলিল প্রতি এক হাজার ও অন্য অফিসের আগত দলিল লেখকের কাছ থেকে দলিল প্রতি দুই হাজার টাকা আদায় করে। দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের টোকেন ছাড়া দলিল রেজিস্ট্রি হয় না।
দুদক টিম দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ডেকে অভিযোগের বিষয়ে অবগত করে সতর্ক করে বলেও জানা গেছে।