বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ প্রথমে নৌকা মার্কার প্রার্থী এবং পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র দাখিল এবং প্রতীক বরাদ্দ পেলেও দলের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঢোলারহাট ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সীমান্ত কুমার বর্মন নির্মল।
এ উপলক্ষে তার নির্বাচনী ভাবনা অবগত করতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢোলারহাট বাজারের শংকর বাবুর মিল মাঠে ইউনিয়নের সাধারন ভোটার ও তার শুভাকাঙ্ক্ষী ও সমর্থকদের নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ভক্ত ও সমর্থকরা চেয়ারম্যান সীমান্ত কুমার বর্মন নির্মলকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাড়িয়ে থাকার জন্য চাপাচাপি করেন। কিন্তু তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সিদ্ধান্তকে সম্মান করে নৌকা প্রতীক না পাওয়ায় ঘোড়া মার্কা নিয়ে নির্বাচন না করার ঘোষনা দেন। শেষে ভক্ত ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ৮ মিনিটের বক্তব্যে বলেন, আমি একজন স্কুল শিক্ষক এবং সাধারন পরিবারের সন্তান হয়েও ২০১৬ সালে ভোট দিয়ে আপনারা আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। এই ঢোলারহাট ইউনিয়নের কতিপয় কুচক্রী ব্যক্তির চক্রান্তে চাল আত্মসাৎ এর মামলা আমার নামে করে। মামলা করার পেছনে অনেক কারনও রয়েছে, সেদিকে আমি আর বলছিনা। সেই মামলায় আমি ৪৭ দিন জেলে হাজতে ছিলাম। জেল হাজতে আমি অনেক কষ্টে ছিলাম। পরে, আমি হাইকোর্ট হতে জামিনে মুক্ত হই। তিনি আরো বলেন, গত ৩০ নভেম্বর চাল আত্মসাৎ এর মামলায় দোষী প্রমাণিত না হওয়ায় ঠাকুরগাঁও জেলা দায়রা জজ আদালতে মামলা আমাকে থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি অশ্রুসজল কন্ঠে বলেন, আমি চাল চোর নই, আমি চাল চুরি করিনি। আমাকে দেওয়া নৌকা মার্কা পরিবর্তন করে পরে অখিল চন্দ্র রায়কে দিলেও আমার কোন দুঃখ নেই। আপনারা আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমি চেয়ারম্যান না থাকলেও আপনাদের সুখে দুখে পাশে আছি ছিলাম থাকব। তিনি অশ্রুসজল কণ্ঠে আরো বলেন, আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে আপনাদের ভোটে চেয়ারম্যান হয়েছিলাম। আজ নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করতে পারছি না। দলের শৃংখলা মাথা পেতে নিয়ে নির্বাচন হতে সরে দাড়ালাম।
এ সময় শতশত কর্মী সমর্থক কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
উল্লেখ্য, ঢোলারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সীমান্ত কুমার বর্মনকে চতুর্থ ধাপের নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন দেয়। মনোনয়নপত্র দাখিলের পূর্বদিন তার নৌকা প্রতীক পরিবর্তন করে দেওয়া হয় স্কুল শিক্ষক অখিল চন্দ্র রায়কে। এ অবস্থায় সীমান্ত কুমার বর্মন নির্মল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেন। পরে অখিল রায়ে মনোময়ন বাতিল হয়ে যায় ঋনখেলাপীর দায়ে।আপিল করেও প্রার্থীতা ফিরে না পাওয়ায় এবং প্রত্যাহারের সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ায় প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ দেওয়া হয়। পরে অখিল রায় হাইকোর্ট হতে প্রার্থীতা ফিরে পেলে সীমান্ত কুমার রায়কে দলীয়ভাবে নির্বাচন হতে সরে দাড়ানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়। এমতাবস্থায় মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ না থাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন হতে সরে দাড়ান নির্মল।