ওয়েব ডেস্ক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যলায় আজও অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। আন্দোলনে থাকা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতাদেরসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বর্তমানে এনবিআরে কেউ প্রবেশ কিংবা বের হতে পারছে না।
শনিবার (২৮ জুন) সকালে কিছু কর্মকর্তা প্রবেশ করতে পারলেও বেলা ১১টা থেকে এনবিআরের প্রধান গেট বন্ধ করে রেখেছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আগারগাঁওয়ে প্রধান কার্যালয়ের সব গেট বন্ধ রাখায় অনেকটা অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে এনবিআর।
এনবিআর ঐক্য পরিষদের সভাপতি অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও মহাসচিব সেহেলা সিদ্দিকাসহ সব পর্যায়ের নেতারা গেটের সামনের রাস্তায় অবস্থান করছেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা বলছেন, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদারসহ নেতাদের এনবিআর প্রাঙ্গণে প্রবেশে বাধা প্রদান করায় গেটের সামনে সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান গ্রহণ করেছি। এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের অপসারণ ছাড়া কোনো ধরনের আলোচনা ফলপ্রসূ হবে না। আজ ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অফিস থেকেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আসতেছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলবে।
গত ২৬ জুনও এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে গেট বন্ধ করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রবেশে বাঁধা দেওয়া হয়েছিল।
এর আগে গতকাল অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে কমপ্লিট শাটডাউন এবং মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি প্রত্যাহারের কথা বললেও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
শুক্রবার এক সংবাদ বিবৃতিতে ঐক্য পরিষদ বলছে, অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় ঐক্য পরিষদকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সেখানে ঐক্য পরিষদের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। ফলে আগামীকাল শনিবার শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি চলবে। ২৭ জুন অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে একটি প্রেস রিলিজ জারি করা হয়েছে যা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ২৬ জুন অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদকে আমন্ত্রণ না জানানোয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কোন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ কর্তৃক ঘোষিত ২৮ জুন থেকে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন যথারীতি চলবে। এছাড়াও সারাদেশের ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তর থেকে এনবিআর অভিমুখে ‘শান্তিপূর্ণ মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি পালিত হবে। তবে, আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই কমপ্লিট শাটডাউনের আওতা বহির্ভূত থাকবে।
দেশ ও রাজস্বের স্বার্থে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের রাজস্ব সংস্কার বিষয়ে দাবিসমূহ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি জানাতে যে কোনো সময় অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বসতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ প্রস্তুত। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে এনবিআর সংস্কার বিষয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার সানুগ্রহ হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
গত ২১ জুন সংবাদ সম্মেলনে করে ২৩ জুন থেকে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সরকার গত ১২ মে এনবিআরকে দুই ভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করে। এর বিরোধিতা করে গত ২৬ মে পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতির আন্দোলন করে এনবিআরের অধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা।
আর ২৫ মে রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অর্থমন্ত্রণালয় জানায়, এনবিআর বিলুপ্ত নয়, বরং এ প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। এর ফলে ২৬ মে কলম বিরতির কর্মসূচি প্রত্যাহার করে এনবিআর। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও চেয়ারম্যানকে অসহযোগিতা করার ঘোষণা দেয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।