দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বেঁচে গেছি আমি। অসুস্থ আমি হয়েছিলাম ঠিক তবে যুদ্ধ করেছেন আমার চিকিৎসকরা। তাদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ।করোনা থেকে মুক্ত হয়ে এভাবেই চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন নীলফামারীর এক যুবক। টানা বিশ দিনের চিকিৎসা শেষে বুধবার (২৯ এপ্রিল) তিনি নীলফামারীর সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন।
করোনা থেকে মুক্তি পাওয়া ওই যুবকের বাড়ি সৈয়দপুর উপজেলায়। নারায়ণগঞ্জের একটি রেস্তোরাঁয় চাকরি করতেন তিনি। করোনা পরিস্থিতিতে রেস্তোরাঁটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানে আটকা পড়েন তিনি। এ অবস্থায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তিনি কখনও অ্যাম্বুলেন্স, কখনও পণ্যবাহী পিকআপে চড়ে গত ৪ এপ্রিল বাড়ি ফেরেন।
ওই তরুণ বলেন, বাড়ি ফেরার পরেই আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। ৭ এপ্রিল আমার নমুনা সংগ্রহ করেন স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। ৯ এপ্রিল রংপুর মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার পর আমার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। ওইদিন রাতেই উপজেলা প্রশাসন আমাদের এলাকার ২০টি বাড়ি লকডাউন করে দেয় । আর আমাকে নেওয়া হয় সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে।
চিকিৎসার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, আইসোলেশন ওয়ার্ডে চলে আমার পরিচর্যা। হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সরা আমাকে নিজের মায়ের পেটের ভাইয়ের মত সেবা দিয়েছেন। সময় মত ওষুধ দিয়েছেন। যুদ্ধ করেছেন ডাক্তাররা। আমাকে নতুন জীবন দিয়েছেন তারা। কিন্তু তারপরও হাসপাতালের জীবনটা ছিল অত্যন্ত দুর্বিষহ। সারাক্ষণ মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখেছি। এখন আল্লাহর কাছে তাদের জন্য খাস দিলে দোয়া করছি আমি।এ সময় তিনি ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী জানান, করোনা আক্রান্ত তরুণ সুস্থ হয়ে ফিরেছেন এটা আমাদের কাছে পরম পাওয়া। তার পরিবারসহ এলাকার ২০ বাড়ি এখনও লকডাউনে রয়েছে। এ সময় উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। আমরা নিয়মিত তাদের খোঁজ রাখছি।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আরিফুল হক বলেন, আমরা ওই তরুণকে সেবা দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেছি। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় ছিলেন। আমরা চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুনরায় দুবার তার নমুনা টেস্ট করেছি। দুবারই নেগেটিভ এসেছে। বুধবার সকালে আমরা একজন সুস্থ মানুষ হিসেবে তাকে বিদায় দিয়েছি। এ সময় হাসপাতালের স্টাফরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছাও জানান। খুব ভালো লাগছে সুস্থ অবস্থায় তাকে পরিবারের হাতে তুলে দিতে পেরেছি।তিনি আরও বলেন, করোনা থেকে মুক্ত হওয়া ওই তরুণের স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান তাকে নিতে এসেছিলো। আনন্দ অশ্রুতে ভেসেছিলেন তারাও। এটাই আমাদের প্রাপ্তি।
দৈনিক প্রত্যয়/ জাহিরুল মিলন