স্পোর্টস ডেস্ক: আগের অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়া নিজেদের মাটিতে বড় ব্যবধানে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল। সেই শোধ তোলার লক্ষ্যে এবার নিজেদের মাটিতে অজিদের আমন্ত্রণ জানায় ইংলিশরা। এজবাস্টনে প্রথম টেস্টের শুরু থেকেই ম্যাচের পেন্ডুলাম ঘুরেছে দুই দিকে। একবার ইংল্যান্ড কেড়ে নেয়, আরেকবার অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রণে। তার ধারাবাহিকতায় সেই রোমাঞ্চ পঞ্চম দিনে এসে ঠেকেছে। প্রথম ম্যাচ জিততে স্বাগতিকদের প্রয়োজন ৭ উইকেট আর অস্ট্রেলিয়ার ১৭৪ রান।
প্রথম ইনিংসে দাপুটে বাজবল ঘরানার খেলা দেখালেও দ্বিতীয় দফায় সেটি দেখাতে পারেনি বেন স্টোকসের দল। মাত্র ২৭৩ রানেই তাদের দ্বিতীয় ইনিংস থেমেছে। ফলে আগের ইনিংসে পাওয়া ৭ রান যোগ হয়ে ২৮১ রানের লক্ষ্য পেয়েছে প্যাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়া। যদিও এমন লক্ষ্য সহজ কিংবা খুব কঠিন কোনোটাই বলার সুযোগ নেই। এর আগে রোমাঞ্চ বাড়াতে সাহায্য করেছে বৃষ্টি। যার কারণে তৃতীয় দিনের বড় একটা সময় সেই পানিতেই ভেসে গেছে।
চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশনেই অলআউট হওয়া ইংলিশরা হয়তো আরও বড় টার্গেট দেওয়ার আশায় ছিল। তবে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক কামিন্স এবং নাথান লায়নের ৪টি করে উইকেট শিকারে তাদের সেই আশা ভেস্তে গেছে। আগের দিন ২৮ রানে দুই উইকেট হারানো ইংল্যান্ড চতুর্থ দিবসেও বহুল আলোচিত ‘বাজবল’ ক্রিকেট খেলার চেষ্টা চালায়। আর সেটি করতে গিয়েই নিজেদের সর্বনাশ করেছেন ব্যাটারদের অনেকেই। জো রুটের কথা ধরা যাক, দিনের প্রথম বলেই স্কুপ খেলেছেন তিনি। কিন্তু অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়েই আউট হয়ে ফিরেছেন ৫৫ বলে ৪৬ রান করে। নাথান লায়নের বলে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে বল মিস করে স্টাম্পিং হয়েছেন তিনি।
আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে আউট হয়েছেন হ্যারি ব্রুক-ওলি পোপরাও। লায়নের বলে ব্রুক আউট হয়েছেন ৫২ বলে ৪৬ রান করে। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর রুট আর ব্রুকের এই ৪৬ রানই। এছাড়া অধিনায়ক বেন স্টোকস আউট হয়েছেন ৬৬ বলে ৪৩ রান করে। তাকে এলবিডব্লুর শিকার বানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।
বাজবলই অবশ্য আবার ইংল্যান্ডকে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৬.২ ওভারে ২৭৩ রান তুলতে সাহায্য করে। শেষ দিকের ব্যাটাররা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলেই শেষ ৪ উইকেটে ৬৩ রান যোগ করেন। রবিনসন দৃঢ় ব্যাটিংয়ে ২৭ এবং অ্যান্ডারসন ও ব্রড ১০ রান করে কিছুটা বাড়িয়ে নেন দলীয় পুঁজি।
এর আগে ২৮২ রানের লক্ষ্যে ইংলিশদের জবাব দিতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া ২ রানে হেরেছিল। ২০০৫ সালের সেই ম্যাচটিও ছিল এই এজবাস্টনেই। তেমনই আরেকটি লক্ষ্যের জবাবে চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে খেলতে নামে অস্ট্রেলিয়া। ভালোই শুরু করেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার এবং আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান উসমান খাজা। দলীয় ৬১ রানে তাদের প্রথম জুটিতে রবিনসন আঘাত হানেন। ৩৬ রান করা ওয়ার্নারকে তিনি তালুবন্দী করেন উইকেটরক্ষক বেয়ারস্টোর।
এরপর অল্প রানের ব্যবধানে আরও দুটি উইকেট হারায় সফরকারীরা। দলীয় ৭৮ রানে মারনাস লাবুশেন (১৩) ও ৮৯ রানে ফিরে যান স্টিভ স্মিথ (৬)। প্রথম ইনিংসের পর এবারও অভিজ্ঞ স্মিথ ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন। দিনের শেষদিকে বোলার স্কট বোল্যান্ডকে সঙ্গে নিয়ে মোটামুটি কিছুটা প্রতিরোধ দেখান খাজা। দিনশেষে তাদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১০৭ রান। খাজা ৩৪ এবং বোল্যান্ড ১৩ রানে অপরাজিত আছেন।
ইংলিশদের হয়ে স্টুয়ার্ট ব্রড ২টি এবং রবিনসন নেন একটি উইকেট।