ইতালিতে নতুন করে লকডাউন জারি হচ্ছে। বড় দিনের উৎসব এবং নিউ ইয়ারকে সামনে রেখে দেশজুড়ে আবারও লকডাউন জারি করছে কর্তৃপক্ষ। দেশজুড়ে দৈনিক সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
সরকারি ছুটির দিনগুলোতে রেড জোনের আওতায় থাকবে পুরো ইতালি। এ সময় অপ্রয়োজনীয় কোনো দোকান-পাট, রেস্টুরেন্ট বা বার খোলা রাখা যাবে না। বড়দিনের উৎসব এবং নতুন বছরকে ঘিরে সব উৎসব-আয়োজন বন্ধ থাকছে। চলতি বছর মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে জনসমাগম ঘটে এমন সব ধরনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইতালি সরকার।
তবে শুধুমাত্র জরুরি কাজ, চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে লোকজনকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সীমিত পরিসরে লোকজন একে অন্যের বাড়িতে বেড়াতে পারবেন বলেও জানানো হয়েছে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী গিসেপে কন্তে বলেছেন, দেশজুড়ে লকডাউন জারির সিদ্ধান্ত খুব সহজ বিষয় ছিল না। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশেষজ্ঞরা খুবই উদ্বিগ্ন যে, ক্রিসমাসের মধ্যে দেশজুড়ে সংক্রমণ এক ধাক্কায় কয়েক গুণ বেড়ে যেতে পারে। সে কারণেই আমাদের এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।’
ইউরোপে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখেছে ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, ইতালিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ লাখ ২১ হাজার ৭৭৮। এর মধ্যে মারা গেছে ৬৭ হাজার ৮৯৪ জন। ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ১২ লাখ ২৬ হাজার ৮৬। বর্তমানে ইতালিতে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ৬ লাখ ২৭ হাজার ৭৯৮। এছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে ২ হাজার ৮১৯ জন।
এদিকে, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকেই হয়তো ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে। ফলে করোনার কারণে দেশজুড়ে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা থেকে হয়তো মুক্তি মিলতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কন্তে।
আগামী ২৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর, ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি এবং ৫ ও ৬ জানুয়ারি ইতালিজুড়ে রেড জোন জারি থাকবে। প্রধানমন্ত্রী কন্তে জানিয়েছেন, এই সময়ের মধ্যে লোকজন শুধুমাত্র জরুরি কাজ এবং চিকিৎসাসেবা নিতে বাড়ির বাইরে যেতে পারবেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, নতুন এই কড়াকড়ির আওতায় লোকজন নিজেদের বাড়িতে মাত্র দু’জন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানোর অনুমতি পাবেন। এর বেশি লোকজন একে অপরের বাড়িতে বেড়াতে যেতে পারবেন না। লকডাউনের সময় রাত ১০ থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত রাত্রিকালীন কারফিউ জারি থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
আগামী ২৮ থেকে ৩০ ডিসেম্বর এবং ৪ জানুয়ারি কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করা হবে। এসব দিনে লোকজন নিজেদের বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন। তবে এ সময় সব ধরনের বার এবং রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে।