ইরানের পরমাণু সমঝোতার সবগুলো পক্ষ ও যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে অবিলম্বে আলোচনায় বসতে চান ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা জোসেপ বোরেল। তার মুখপাত্র পিটার স্ট্যানো সোমবার ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।
বোরেলের একই প্রস্তাবের ব্যাপারে ইরানের প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। স্ট্যানো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ সব পক্ষকে এক টেবিলে নিয়ে আসার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, জোসেফ বোরেল চান পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী সবগুলো দেশ এই সমঝোতা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করুক।
এর আগে জোসেফ বোরেল যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতিতে পরমাণু সমঝোতার বাকি দেশগুলোকে নিয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তা নাকচ করে দিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খাতিবজাদে বলেছেন, পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে ইউরোপ সম্প্রতি যে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে তার জন্য বর্তমান সময়কে উপযুক্ত মনে করছে না তেহরান।
খাতিবজাদে রোববার তেহরানে বলেন, জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর এখন পর্যন্ত মার্কিন প্রশাসনের নীতি-অবস্থানে বিন্দুমাত্র পরিবর্তন আসেনি। বাইডেন প্রশাসন যে শুধু সাবেক ট্রাম্প প্রশাসনের ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের’ ব্যর্থ নীতি অনুসরণ করে যাচ্ছে তাই নয় সেই সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের ব্যাপারে নিজের করণীয় ঠিক করেনি।
এদিকে, ইরান পরমাণু সমঝোতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বসার ইউরোপীয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় হতাশা প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে অর্থবহ কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে তারা।
খাতিবজাদের বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মাথায় হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, ‘আমরা ইরানের প্রতিক্রিয়ায় হতাশ হলেও একই সময়ে দু’পক্ষের এই সমঝোতায় ফিরে আসার লক্ষ্যে অর্থবহ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাতে নিজেদের প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করছি।’ তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে পরমাণু সমঝোতার বাকি পাঁচ দেশ চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, ব্রিটেন ও জার্মানির সঙ্গে আলোচনা করবে ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, পরমাণু সমঝোতায় তাদের ফিরে আসার একই সময়ে ইরানকেও নিজেদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ফিরতে হবে। কিন্তু তেহরান বলছে, যুক্তরাষ্ট্র এই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার এক বছর পর ইরান এতে দেয়া নিজের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পরিমাণ কমাতে শুরু করেছে। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রকে আগে এই সমঝোতায় ফিরে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরভাবে প্রত্যাহার করতে হবে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার সুফল বাস্তবে পাওয়ার পর ইরান এই সমঝোতায় দেয়া প্রতিশ্রুতিতে পূর্ণাঙ্গভাবে ফিরে যাবে।