ধর্ম ডেস্ক: আবদুস সাত্তার আইনী
কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ فَإِنْ زَلَلْتُمْ مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَتْكُمُ الْبَيِّنَاتُ فَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
হে মুমিনগণ, তোমরা সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। সুস্পষ্ট নিদর্শন তোমাদের কাছে আসার পর যদি তোমাদের পদস্খলন ঘটে তবে জেনে রাখো, নিশ্চয় আল্লাহ মহাপরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়। (সুরা বাকারা: ২০৮, ২০৯)
এখানে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, তারা যেন দীনের সমস্ত শরয়ী বিষয়ের ওপর অটল থাকে এবং কোনো একটিকে বাদ না দেয়। তারা যেন তাদের মতো না হয় যারা নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। কারণ এসব লোক শরীয়তের যেসব বিষয় তাদের প্রবৃত্তির সঙ্গে মেলে সেগুলো পালন করে এবং যেগুলো তাদের প্রবৃত্তির সঙ্গে মেলে না সেগুলো পালন করে না। অথচ উচিত হলো প্রবৃত্তি ও স্বভাবকে শরীয়ত অনুযায়ী গঠন করে এবং সাধ্যের মধ্যে সমস্ত বিধান পালন করা ও কল্যাণকর কাজ করা। আর সাধ্যের বাইরে যে-সকল বিধান ও আমল রয়েছে সেগুলোর জন্য নিয়ত ও সংকল্প করা। নিয়তের দ্বারাও সওয়াব মেলে।
ইসলামে সর্বাত্মকভাবে প্রবেশের পর শয়তানের পথ ও পদাঙ্ক পরিত্যাগ না করে কোনো উপায়ই নেই। শয়তান মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু। সে কেবল অশ্লীল, গর্হিত ও নিন্দনীয় কাজেরই নির্দেশ দেয় এবং ক্ষতি ছাড়া আর কিছু চায় না। বান্দার পদস্খলন ও বিচ্যুতি ঘটতে পারে, তাই আল্লাহ তাআলা বলেছেন, সুস্পষ্ট নিদর্শন (সুনিশ্চিত জ্ঞান) আসার পরও যদি তোমাদের পদস্খলন ঘটে তবে জেনে রাখো, নিশ্চয় আল্লাহ মহাপরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়। এতে অত্যন্ত কঠিন ধমকি রয়েছে। সুতরাং পদস্খলন ও বিচ্যুতি যাতে না ঘটে তার সর্বদা সর্তকা থাকা উচিত এবং যে-কোনো ধরনের স্খলন থেকে দূরে থাকা উচিত। কারণ, প্রত্যেক পাপীই তার প্রাপ্য শাস্তি পাবে। এটাই আল্লাহর হিকমত। (তাফসিরে সা‘দী: ৯৪)
যারা ইসলামকে শুধু মসজিদ ও ইবাদতের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে, সামাজিক আচার-ব্যবহারকে ইসলামের সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করে না, তাদের জন্য এই আয়াতে কঠিন সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। তথাকথিত দীনদারদের মধ্যেই ত্রুটি বেশি দেখা যায়। এরা দৈনন্দিন আচার-আচরণ, বিশেষত সামাজিকতার ক্ষেত্রে পারস্পরিক যেসব অধিকার রয়েছে সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। মনে হয় এরা যেন এসব রীতিনীতিকে ইসলামের নির্দেশ বলেই বিশ্বাস করে না। তাই এগুলো জানতে-শিখতেও যেমন এদের কোনো আগ্রহ নেই, তেমনি এগুলোর অনুশীলনেও এদের কোনো ইচ্ছা নেই। (তাফসিরে মা‘আরিফুল কোরআন: ১/৪৭৩)