দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ যশোরের রেড জোনের মধ্যে কেবল রোগীর বাড়ি ও তার বাড়ির আশপাশের এলাকায় লকডাউন কার্যকর করেছে প্রশাসন। কিন্তু একশ’ গজের মধ্যে করা এ লকডাউনও মানছেন না ওই এলাকার মানুষজন। অবাধে যাতায়াত করছেন সংরক্ষিত ওই জোনে বাসীরা। তাদের দাবি, প্রয়োজনের তাগিদে তারা ঘরের বাইরে যাচ্ছেন।
যশোরে মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনা পজেটিভের সংখ্যা ২৪২ জন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের এলাকাভিত্তিক সংখ্যা বিবেচনায় যশোর জেলার ১৭টি এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করেছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে রেড জোন এলাকাগুলোতে লকডাউন কার্যকর হওয়ার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন পুরো এলাকা লকডাউন না করে কেবল রোগী আছে এমন স্থানের একশ’গজ এলাকা লকডাউন করেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান জানান, জনপ্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করে পুরো এলাকার পরিবর্তে যে এলাকায় রোগী আছে তার আশপাশের কিছু বাড়ি ধরে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিকেল থেকেই কার্যকর করা হয়।
যশোর শহরের পৌর এলাকার তিন নম্বর ওয়ার্ডের নওয়াপাড়া রোড এবং ধানপট্টি এলাকায় লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর মোকসিমুল বারী অপু বলেন, রোগীর বাড়ির এলাকার চতুর্দিকে একশ’ গজ এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। ওই এলাকায় কেউ প্রবেশ ও বাহির হতে পারবে না মর্মে প্রচারও করা হয়েছে। এছাড়া বাসিন্দাদের সুবিধার্থে ওই এলাকায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তালিকা করে খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। এছাড়া যারা স্বচ্ছল তাদের জন্য ভ্যানে করে সদাইপাতি পাঠানো হবে, তারা সেখান থেকে কিনতে পারবেন বলে জানান তিনি।
কিন্তু সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় পুরো উল্টো চিত্র। একশ’ গজের মধ্যে লকডাউন হলেও তা মানছে না ওই এলাকার মানুষজন। লকডাউনের জন্য দেয়া বাঁশের বেড়া পাড় হয়ে অবাধে যাতায়াত করছেন তারা। এমনকি অন্য এলাকার মানুষও সেখানে অবাধে প্রবেশ করছেন। তাদের দাবি প্রয়োজনের কারণে তারা ঘরের বাইরে যাচ্ছেন।
শামসুর রহমান নামে একজন বলেন, আটকে রাখলেই হবে। জীবন চলবে কি করে। জীবন বাঁচাতে ঘরের বাইরে বের হতে হবে। তাই বের হয়েছি।
আরিফ হোসেন নামে একজন জানান, সকাল থেকে লকডাউনের বেড়া গলে মানুষ যাচ্ছে-আসছে। বাধা দিলে শুনতে চায় না। এমন হলে লকডাউনের কোন মানে হয় না।
রহিমা বেগম নামে অপর এক নারী বলেন, বাধা দিলে তর্ক করে। যে বাড়িতে করোনা রোগী আছে তারাও বাইরে আসা যাওয়া করছে। লকডাউন করেছে কিন্তু দেখভালের কেউ নেই। তাই কেউ মানছে না। তিনি বলেন, পুলিশ দিয়ে কঠোরতা আরোপ না করলে কোন কাজ হবে না।
তবে ব্যতিক্রম দেখা গেছে যশোর সদরের উপশহর ইউনিয়নে। সেখানে গ্রাম পুলিশের সদস্যরা লকডাউন কার্যকরে কর্মরত রয়েছেন। সাথে সচেতনতামূলক প্রচারণাও চালাচ্ছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এহসানুর রহমান লিটু জানান, তার এলাকার মধ্যে এ-ব্লক এবং সি-ব্লকের দুটি লেনে লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে। ওই জোনের মধ্যে গ্রাম পুলিশ দিয়ে পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি পুরো ইউনিয়ন জুড়ে সচেতনতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে।