করোনার ঝুঁকি মোকাবিলায় এবার চট্টগ্রামের তিন প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসানো হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
সোমবার (২২ মার্চ) বিকেল ৪টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমন্বয় ও করণীয় নির্ধারণ বিষয়ক জরুরি সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘কোভিড ভ্যাকসিন কার্যক্রম সাফল্যের সঙ্গে শুরু হলেও অনেকে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। টিকা নেয়ার পরে মানুষ অসচেতন হয়ে পড়েছে। গণপরিবহনে যাত্রীদের মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে নগরীর তিন প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হবে। যাদের মাস্ক থাকবে না তাদের বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক করোনার ঝুঁকি মোকাবিলায় মাস্ক পরিধানসহ শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সমুদ্র সৈকত, পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র ও অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পাশাপাশি মানুষের মাঝে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে এ সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।’
এছাড়াও সচেতনতা বাড়াতে মাইকিংয়ের পাশাপাশি নগরের স্টেডিয়াম, সিআরবি, বাদামতলী মোড়, বিনোদন কেন্দ্র, পার্ক ও সি-বিচসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিএনসিসি, স্কাউট, রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড, রেড ক্রিসেন্ট ও এনজিও প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বলেন, ‘নগরের সকল কমিউনিটি সেন্টার, হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে সামাজিক-রাজনৈতিক অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে ১০০ জনের অধিক অতিথির সমাগম নিষিদ্ধ করে মালিকদের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি ও তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান পরিচালনা না করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সকল মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব মেনে নামাজ আদায়ের বিষয়টি আগামী শুক্রবার জুম্মার খুৎবার আগে প্রচার করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘অসচেতনতার কারণে কোভিড পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। করোনা রোগীদের সুচিকিৎসায় আন্দরকিল্লা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল-২, হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৫০টি শয্যা প্রস্তুত রয়েছে। নির্দিষ্ট বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে ৬০-৭০টি আইসিইউ বেড রাখা হয়েছে। মুমূর্ষু রোগীদের জন্য চমেক হাসপাতালে ৮০টি, জেনারেল হাসপাতালে ৩০টি, বিআইটিআইডিতে ১০টি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ১০০টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে এগুলো ব্যবহার করা হবে।’
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তার, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী, সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম, জেলা তথ্য অফিসের উপ-পরিচালক মো. সাঈদ হাসান, জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম জিয়াউল হায়দার হেনরী, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. মো. নুরুল হায়দার, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. কফিল উদ্দিন, সিটি করপোরেশনের জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. মো. হাসান মুরাদ চৌধুরী ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া প্রমুখ।