স্বাস্থ্য প্রত্যয় ডেস্কঃ বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপ নেয়া করোনাভাইরাসে মৃত্যুর মিছিল ক্রমেই লম্বা হচ্ছে। তবে আশার কথা হলো এখন পর্যন্ত ৮ লাখের বেশি মানুষ এ মারণ-ভাইরাসের হাত থেকে সুস্থও হয়ে উঠেছেন।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়ার্ল্ডোমিটারে রোববার (২৬ এপ্রিল) সকালে এ সংখ্যা নিশ্চিত করা হয়।
এরই মধ্যে ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ২৯ লাখ ২১ হাজার ২০১ আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে প্রাণহানি ঘটেছে ২ লাখ ৩ হাজার ২৮৯ জনের।
আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৮ লাখ ৩৬ হাজার ৯৬৯ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ১৮ লাখ ৮০ হাজার ৯৪৩ জন। এদের মধ্যে ১৮ লাখ ২৩ হাজার ৮০ জনের জনের শরীরে মৃদু সংক্রমণ থাকলেও ৫৭ হাজার ৮৬৩ জনের অবস্থা গুরুতর।
ভাইরাসটির আক্রমণে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটিতে গত একদিনে আরো দুই হাজার ৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজার ২৬৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গত একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৩৫ হাজার মানুষ। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯ লাখ ৬০ হাজার ৮৯৬ জন।
মৃতের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরে অবস্থানে রয়েছে ইউরোপের দেশ ইতালি। দেশটিতে এ পর্যন্ত ২৬ হাজার ৩৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫১ জন।
ইতালির পরের অবস্থানেই রয়েছে স্পেন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২২ হাজার ৯০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে অবশ্য ২য় অবস্থানে রয়েছে এ দেশটি। এখানে ২ লাখ ২৩ হাজার ৭৫৯ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
মৃত্যুর তালিকার চার নম্বরে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২২ হাজার ৬১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৬১ হাজার ৪৮৮ জন।
ফ্রান্সের পরের অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার ৩১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৭৭ জন।
এদিকে জার্মানিতে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫১৩ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৮৭৭ জনের।
ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয় চীনে। সেখানে এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ৮২৭ জন এবং মারা গেছেন ৪ হাজার ৬৩২ জন।
এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ইরানে। এখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮৯ হাজার ৩২৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৬৫০ জনের।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৯৯৮ জনের শরীরে। এদের মধ্যে মারা গেছেন ১৪০ জন এবং সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১১২ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪ হাজার ৭৪৬ জন।
ডিসেম্বরে চীনে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া গেলেও বাংলাদেশে ভাইরাসটি শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। ওইদিন তিনজন করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা অনেকটাই সমান্তরাল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে হুট করেই বাড়তে থাকে রোগীর সংখ্যা।
তবে ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য মার্চেই ব্যবস্থা নেয় সরকার। বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। পঞ্চম দফায় বাড়িয়ে সেই ছুটি করা হয়েছে আগামী ৫ মে পর্যন্ত।
শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের পদক্ষেপ অনেকটা এরকমই। তবে এর মাঝেও কিছু কিছু দেশ তাদের দেয়া লকডাউন কিছুটা শিথিল করছে। স্পেন, জার্মানি ও ভারত সেই পথে হেঁটেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালিও তেমনটাই ভাবছে।
দৈনিক প্রত্যয়/ আন্তর্জাতিক/ জাহিরুল মিলন