লেখকের নিজ হাতে আঁকা আমাদের সাকিব।
রাত জাগিয়ে রেখেছে আমায় মানুষটি টিভির সামনে ঘুম হারাম করে। প্রতিদানে, সামান্য পেন্সিল স্কেচ করলাম। অথচ অগনতিবার রক্তে বান এনেছে যার বাঁ হাতের ঘূর্ণি আর টগবগে উত্তেজনা ধরিয়ে দিয়েছে স্কয়ার কাটে তার চার-ছক্কার দূর্বার গতি। যার নাম, রাজনীতির দুই মেরুতে কঠিন অবস্থানরত বিভক্ত পুরো জাতীকে অদ্ভুত চুম্বকের টানে সমমেরুতে নিয়ে আসতে সক্ষম, যে নাম নিয়ে কাড়াকাড়ি পরে যায় নব্য পিতাদের মাঝে সদ্যোজাত পুত্রের নামকরনের জন্যে, আজকে দুর্ভাগ্য, অপদস্থতার চরম শিখরেও উঠে গেলেন এই অল রাউন্ডার, যদিও সুযোগ বুঝে চাপিয়ে দেওয়া কারনটাকে নিজের দোষ বলে বাধ্য হয়েই স্বীকার করে নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখছেন বলেই, আমার সরল মনের ধারনা।
পাড়ার কুকুরের ঘেউ ঘেউ, কানে বাঁধে, কিন্তু ক্ষুধার্ত বাঘের একটা গর্জনেই পিলে চমকানোর জন্যে যথেষ্ট।
ভয় পাসনা রে বাপ, যার ICC / BCC নাই ; তার ষোল কোটি অন্ধ ভক্ত আছে !
রাজত্ব হয়তো বেহাত হয়েছে সাময়িক ষড়যন্ত্রে, তবে মুকুট কিন্তু এখনো স্পর্শ করার মত বুকের পাটা হয়নি কারই। ওটা উপার্জন করতে হয়… তোর মত। দান-সদগায় ওটা যে কারো মাথায় পরিয়ে দেবার মত অত উদার মন খোদ উপরওয়ালারও নেই। আর রাজ সিংহাসনে বসবার যোগ্য ব্যক্তির, মা-বাবাই হয়তো এখনো বিছানাতেও যায়নি। Quality never comes by chance, it pays. Form is temporary but class is universal.
যেটা বুঝি না, এতটা মূর্খ্য জাতী হয়ে গেলাম কি করে আমরা যে বার বারই গোপন কারনে উপরের দিকে থুতুতো ছিটাচ্ছিই, আবার আহাম্মকের মত অপেক্ষাও করে আছি, কখন নিজের মুখেই সেটা পরবে। ছিঃ।
আমার সৌভাগ্য, খুব সম্ভবত তখনকার সময়ে পুরো বিশ্বের সর্ব কনিষ্ঠ, যিনি প্রথম বাংলাদেশের জন্যে খেলার জগতে বিশ্বসন্মান বয়ে এনেছিলেন, তিনি দাবারু গ্র্যান্ড মাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ, যিনি একই স্কুলে ক্লাসমেট আমার।
আর দুঃখ হলো, লালমাটিয়ার বাড়িতে বসে তার নিজের মুখেই শোনা, যে প্রকৃত পৃষ্ঠপোষকতা কোনদিনই পাননি তিনি দেশ থেকে সত্যিকারার্থে। আহ্হা… অমূল্য একটা রতন হেলায় বিসর্জন দিলাম আমরা। মূল্যায়নতো অনেক পরের কথা।
আর সারে বার হাজার মাইল দুরের এই উত্তর গোলার্ধের দেশ, ক্যানাডার সপ্তম শ্রেণীর জাতীয় পাঠ্য পুস্তকেও বাধ্যতামূলক পঠণ হিসেবে স্থান করে নেওয়া নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস সাহেবকে নুন্যতম সন্মানটুকু বেশিদিন আমরাতো দেইইনি, উল্টো মাথার উপর হুলিয়া নিয়ে বেঁচে আছেন ফেরারী “মর্যাদা”য় পরাভূমে।
ফেসবুক ছাড়া যেমন ক্রোধ ক্ষোভ প্রকাশের ক্ষমতা নেই, তেমন সন্মান সান্তনা দেবার মাধ্যমও ওটাই আমাদের মত প্রবাসীর। পেন্সিলের আঁকিঝুকির মাঝেই তাই জানালাম এই আইকন কে নিজের অপরাধী মনে থেকে যদি সামান্যতমও ঋণমুক্ত হওয়া যায় এই বাচ্চা ছেলেটার কাছে। পুরো জাতী যে এর কাছে ঋণী আমরা…
মধ্য বয়সে পৌঁছে যাওয়া নিয়াজকে আমরা গলার মালা করতে পারিনি, তাজ্ করে মাথায় রাখতে পারিনি ডঃ ইউনুসকে, অন্তত এই যুবককে যেন চিরদিন বক্ষে ধারণ করতে পারি, তাই হোক দৃঢ় প্রতিজ্ঞা আজকের দিনে হতভাগা ব্যাথিত সমগ্র জাতীর।
… রিয়াজ রব্বানী, টরেন্টো।
30 Oct, 2019.