এ এম উবায়েদ, নিজস্ব প্রতিনিধি:কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার কুড়িখাই মাজারে হযরত শাহ সামসুদ্দিন বোখারীর ওরশ উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপী মেলা শুরু হয়েছে । কটিয়াদী উপজেলার ৫নং মুমুরদিয়া ইউনিয়নের কুড়িখাই গ্রাম অবস্থিত।
জনশ্রুতি রয়েছে, ১২২৫ সালে ১২ আউলিয়ার সঙ্গে হযরত শাহ সামসুদ্দিন তিন সহচর শাহ নাছির, শাহ কবীর ও শাহ কলন্দরকে সঙ্গে নিয়ে ইসলাম প্রচারের জন্য কটিয়াদী উপজেলার কুড়িখাইয়ে আস্তানা স্থাপন করেন।
এ কুড়িখাইয়ে প্রতিবছর মাঘ মাসের শেষ মঙ্গলবার ৭ দিনব্যাপী প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ওরশ উপলক্ষ্যে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় নানান ধরণের বাতাসা, বিন্নিখই, কাঠের আসবাবপত্র ও খেলনাসহ নানা পণ্যের হাজারো স্টল বসে।
প্রতি বছরের মাঘ মাসের শেষ সোমবার এ মেলা শুরু হয়। সপ্তাহব্যাপী মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সার্কাস, মৃত্যুকূপ, নাগরদোলা, পুতুল খেলাসহ রকমারি পসরা নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। বসে বিন্নি ধানের খই, কদমা, বাতাসা, গুড়, জিলাপির দোকান। এই মেলায় পাওয়া যায় বিশাল বিশাল মাছ, কাঠের আসবাবপত্র। পার্শ্ববর্তী কৃষি জমিসহ বিশাল চত্বরে বসে এই মেলা।
এই মেলায় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ মাছের হাট। মেলায় বিশাল এলাকাজুড়ে বসে মাছের হাট। এই হাটে বোয়াল, চিতল, আইর, রুই, কাতলা, সিলভার কার্প, পাঙ্গাস, মাগুর, বাঘাআইরসহ নানা ধরনের অন্তত চার শতাধিক মাছের দোকান বসে। মাছ বিক্রেতারা কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জের হাওর ও নদী থেকে এক সপ্তাহ পূর্ব থেকে এসব মাছ সংগ্রহ করে মেলায় বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ধনাঢ্য ব্যক্তিসহ সর্বস্তরের মানুষ এই মেলা থেকে মাছ কিনে নিয়ে যান। এছাড়া মেলায় হাজারো দর্শক আসেন মাছ দেখতে।
এলাকায় প্রচলিত রয়েছে, মেলার বোয়ালসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ খেলে দুরারোগ্য রোগও ভালো হয়। মেলা উপলক্ষ্যে প্রতি বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত দেওয়ার নিয়ম দীর্ঘদিনের।
এ ছাড়া নতুন জামাইদের মেলার মাছ দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। আর মেলার মাছ না হলে জামাইদের মাছ খেতে দেওয়া হয় না।এদিকে মেলা উপলক্ষ্যে ৪০ গ্রামের মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
মেলা কমিটির সম্পাদক মঈনুজ্জামান অপু বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে মেলা হওয়ায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।