প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক : করোনায় মারাত্মকভাবে আক্রান্ত এক অন্তঃসত্ত্বা। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেয়া হলো। এরপরই কোমায় তিনি। ওদিকে গর্ভস্থ শিশুকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন চিকিৎসকরা। তিনি কোমায় থাকা অবস্থায়ই জরুরি ভিত্তিকে সিজারিয়ান অপারেশন করা হলো। নির্ধারিত সময়ের দু’মাস আগেই জন্ম নিলো তার একটি শিশু। এই নারীর নাম ক্রিস্টিনা জোনস (৩৯)। ফেব্রুয়ারিতে তার করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে।
এর আট দিন পর তাকে বৃটেনের মার্টির টিডফিলে অবস্থিত প্রিন্স চার্লস হাসপাতালে নেয়া হয়। আস্তে আস্তে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ১লা মার্চ তাকে ভেন্টিলেশনে নেয়া হয়। এ অবস্থায় তার স্বামী নিক’কে (৪৫) কল করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাকে জানিয়ে দেয়া হয় ক্রিস্টিনার গর্ভস্থ শিশুকে ভূমিষ্ঠ করাতে হবে, যদিও তার ভূমিষ্ঠ হওয়া তখনও কমপক্ষে ৩০ সপ্তাহ বাকি। এই সন্তানকে ভূমিষ্ঠ করিয়ে চিকিৎসকরা ক্রিস্টিনার পেটের ভিতর ফাঁকা জায়গা সৃষ্টি করতে চাইলেন। যাতে তার ফুসফুস পর্যাপ্তভাবে প্রসারিত হওয়ার যথেষ্ট জায়গা পায়। তিনি অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় ওষুধও দেয়া যাচ্ছিল না। এ অবস্থায় জরুরি সিজারিয়ান অপারেশন ছাড়া তাদের হাতে কোনো বিকল্প নেই। চিকিৎসকদের মন্তব্যে সায় দিলেন নিক।
অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হলো ক্রিস্টিনাকে। তার স্বামীকে বলা হলো, কমপক্ষে একজনকে হলেও আমরা রক্ষা করার চেষ্টা করবো। ঠিকই ২রা মার্চ ক্রিস্টিনার গর্ভে জন্ম নেয় একটি কন্যা সন্তান। তার নাম রাখা হয় অ্যাঞ্জেল গ্রেস হোপ জনস। জন্মের সময় তার ওজন ছিল ৩ পাউন্ড ৬ আউন্স। প্রথমদিকে অ্যাঞ্জেল শ্বাস প্রশ্বাস নিচ্ছিল না। এ জন্য তাকে ৫ দিনের জন্য রাখা হয় চমব্রানে দ্য গ্রেঞ্জ হাসপাতালে। দু’বার করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে তার। এতে নেগেটিভ এসেছে। এরপরই পরিবারের সদস্যরা তাকে দেখার অনুমতি পেয়েছেন।
ভিক্রিয়েটের মাধ্যমে প্রতিদিনই মেয়ের আপডেট দেখেছেন নিক। উল্লেখ্য, ভিক্রিয়েট হলো ভিডিও শেয়ারিং সার্ভিস। এর মধ্য দিয়ে বৃটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা (এনএইচএস) এমন সব অবস্থায় পরিবার, পিতামাতা এবং ক্লিনিক্যাল টিমের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করে দেয়। ৮ই মার্চ ক্রিস্টিনার চেতনা ফেরে। এ সময় ক্রিস্টিনা বলেছেন, আমি চেতনা ফিরে পাওয়ার পর তারা আমাকে বাবুটার একটা ছবি দেখিয়েছে। আমি তো মনেই করতে পারছি না যে, অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম। আর এই বাচ্চাটা যে আমার এমনটাও স্মরণ করতে পারছি না। উল্লেখ্য, শিশুটির নাম আপাতত অ্যাঞ্জেল রাখা হয়েছে।
আপাতত এমন নাম রাখা হলেও ক্রিস্টিনার খুব পছন্দের এই নাম। তিনি বলেছেন, চমৎকার নাম। এই নামটাই রাখা উচিত। শিশুর বয়স দু’সপ্তাহ পূরণ হওয়ার পরই প্রথম তাকে দেখতে অনুমতি দেয়া হয় ক্রিস্টিনাকে। বর্তমানে ক্রিস্টিনা বাড়ি ফিরে গেছেন। সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখন তাদের সংসারে কিছুটা হলেও হাসি ফিরেছে।
আরও পড়ুন :ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ফ্রান্সের অর্থনীতি,একই রকম উন্নতি হবে ইউরোপের সব দেশের