শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৩২ পূর্বাহ্ন
ওয়েব ডেস্ক: দুর্নীতি দমন কমিশন অধ্যাদেশ-২০২৫ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুপারিশ বাদ দেওয়ায় গভীর ক্ষোভ ও হতাশা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটির অভিযোগ, ক্ষমতাসীনদের ইঙ্গিতে প্রতিপক্ষকে টার্গেট করার হাতিয়ার হিসেবে দুদককে ব্যবহার করার যে প্রবণতা, তা বন্ধ করার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব কথা জানিয়েছে টিআইবি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদকের জন্মলগ্ন থেকে প্রতিষ্ঠানটি জনআস্থার সংকটে ভুগছে। ক্ষমতাসীনদের সুরক্ষা ও প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের যে ইতিহাস, তা থেকে বেরিয়ে আসতে ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ ছিল কৌশলগতভাবে অত্যন্ত জরুরি। সরকার তা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে এটি দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও এই প্রস্তাব বাদ দেওয়া সরকারের নিজের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা এবং স্ববিরোধী অবস্থানেরই প্রমাণ।
টিআইবি বলছে, জুলাই সনদে সব রাজনৈতিক দলের সম্পূর্ণ ঐকমত্যসহ অন্তর্ভুক্ত এবং টিআইবির ধারাবাহিক অধিপরামর্শের ফলে এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সম্মতির পরও চূড়ান্ত অধ্যাদেশে তা বাদ দেওয়া শুধু হতাশাজনক নয়, সরকারের অভ্যন্তরে প্রায় সব ক্ষেত্রে সংস্কার-প্রতিরোধক মহলের ষড়যন্ত্রের কাছে রাষ্ট্র সংস্কারের অভিষ্টের জিম্মিদশারও পরিচায়ক। ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও ১১টি সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠার যুগান্তকারী সিদ্ধান্তগ্রহণকারী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা দুদককে জবাবদিহির বাইরে রাখার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলসহ সব দেশবাসীকে কী এই বার্তা দিতে চাইছেন যে, রাষ্ট্রসংস্কার কেবলই ফাঁকাবুলি? এই প্রশ্নও করছে সংস্থাটি।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জন্মলগ্ন থেকে প্রতিষ্ঠানটি যেভাবে জনআস্থার সংকটে ভুগছে ও স্বার্থান্বেষী মহলের ক্রীড়নক হিসেবে ক্ষমতাসীনদের সুরক্ষা আর প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে, তা থেকে উত্তরণ ঘটাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ প্রস্তাবটি করা হয়েছিল। এই কমিটি কর্তৃক দুদকের কাজের ষাণ্মাসিক ভিত্তিতে পর্যালোচনা, গণশুনানি ও পরামর্শের মাধ্যমে দুদককে প্রকৃতার্থে একটি জবাবদিহিমূলক, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার কৌশলগত সুপারিশটি অনুধাবনে সরকার ব্যর্থ হয়েছে, যা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্ব-প্রাপ্ত সরকারের জন্য এটি স্ববিরোধী ও সংস্কার পরিপন্থি নজির।